ফার্মগেটে হঠাৎ হকারদের দৌড়ঝাঁপ
অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মত আজও সকাল সকাল ফার্মগেট থেকে গ্রিন রোডে ফুটপাত দখল করে দোকান বসিয়েছেন হকাররা। সবই চলছিল ঠিকঠাক। পথচারী-ক্রেতা-হকারদের ভিড়ে জমজমাট ফুটপাত। পুরো ফুটপাত দখল করে চলছে তাদের অস্থায়ী দোকান। এতে রীতিমত বিরক্ত সাধারণ পথচারীরা। ফুটপাত ছেড়ে তাদের হাঁটতে হচ্ছে মূল সড়ক ধরে।
বুধবার (২৬ জুন) ফার্মগেট থেকে গ্রিন রোডের দুপুরের দৃশ্য এটি। এমন সময় আনন্দ সিনেমা হলের সামনে এসে উপস্থিত হয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার বিশেষ গাড়ি, সঙ্গে বর্জ্য অপসারণের গাড়িও। তা দেখেই ফুটপাত দখল করে বসা হকারদের অনেকেই বুঝতে পারেন তাদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এমন ইঙ্গিত বুঝে অনেকেই দ্রুত তাদের দোকান সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে আবার এগুলো আমলে না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেই যাচ্ছেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হন ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর নাহীদ আহসান। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। উপস্থিত হয়েই তিনি ফুটপাত দখলমুক্তের জন্য উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।
তার কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মীরা বিশেষ গাড়ির মাধ্যমে আনন্দ সিনেমা হলের বিপরীত পাশ থেকে গ্রিন রোডের দিকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন।
অভিযান শুরু হওয়া মাত্রই হকারদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে যায়। তারা নিজ নিজ দোকানের মালামাল নিয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। এ সময় অনেকের দোকানের মালামাল রক্ষা পেলেও কাঠের তৈরি অস্থায়ী দোকানের কাঠামো (ভ্যান আকৃতির) ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
ফুটপাত দখল করে অস্থায়ীভাবে দোকান দেয়া হকার সাইদুর রহমান বলেন, পুনর্বাসন না করে এভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালালে আমরা কোথায় যাব? আমাদের তো আগে কিছু বলা হয়নি, হঠাৎ করেই এভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিলে আমরা আর ফুটপাতে বসব না।
উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর নাহীদ আহসান জাগো নিউজকে বলেন, ফুটপাত দখল করে পথচারীদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছেন এসব হকাররা। বারবার বলার পরও তারা এভাবে ফুটপাত দখল করে রেখেছে। যে কারণে আজ আমরা উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছি। পথচারীরা যেন নির্বিঘ্নে স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারেন সেজন্য আমরা ফুটপাত দখলমুক্ত করব। এছাড়া রেস্টুরেন্টেও আমরা অভিযান পরিচালনা করব। ডিএনসিসির এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযান পরিচালনার দৃশ্য দেখতে দেখতে এ সময় হাবিবুর রহমান নামের একজন পথচারী বলেন, আমি প্রতিদিন এই পথ ব্যবহার করে অফিসে যাতায়াত করি। হকারদের কারণে ফুটপাত একেবারেই ব্যবহার করা যায় না।
তিনি বলেন, সাধারণ পথচারীদের বাধ্য হয়েই ফুটপাত ছেড়ে মূল সড়ক ধরে হাঁটতে হয়। এই ব্যস্ত সড়কের ফুটপাতে কোনোভাবেই হকাদের বসতে দেয়া উচিত নয়। এতে করে সাধারণ মানুষের চলাচলে খুবই ভোগান্তি হয়।
এএস/এমএমজেড/জেআইএম