খেলোয়াড়দের শেষ বয়সে কষ্ট করতে দেব না : প্রধানমন্ত্রী
সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীমসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি শেষ বয়সে খেলোয়াড়দের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। খেলোয়াড়দের বৃদ্ধ বয়সে যেন কষ্ট না করতে হয়, সেজন্য তাদের পুনর্বাসন করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা হয়। এতে এসব নির্দেশনা দেন ও খেলোয়াড়দের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর এসব বার্তা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘খেলা নিয়ে সবার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের তিনি সন্তানের মতো মনে করেন। সাকিব, মুশফিক এদের সম্পর্কে খুব ভালো মন্তব্য করেছেন। এদের নিয়ে আরও কিছু করতে চান। এদের আরও সুযোগ-সুবিধা দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করে তিনি।’
কলসিন্দুরের ফুটবল খেলা মেয়েদেরও সুবিধা দেয়া হবে বলে জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, ‘উনার নির্দেশনাটা হলো খেলোয়াড়দের শুধু খেলাকালীন সময়ে নয়, তারা যখন পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের মতো বার্ধক্যে যাবে, তখন খুব কষ্ট হয়। তিনি এ সম্পর্কে অবহিত। কম বয়সে খরচ করে ফেলে, টাকা জমায় না। ঠকা খায়। নানা ধরনের সমস্যায় পড়ে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন, আমরা এটা হতে দেব না।’
‘এখন যেমন তাদের সাহায্য দেব, তাদের মাথায় হাত রাখব, পরবর্তী পর্যায়েও তারা যেন নিচে না পড়ে যায়, এজন্য ক্রিয়া মন্ত্রণালয়কে সুনির্দিষ্ট অর্ডার দিয়েছেন। তাদের বলেছেন প্রকল্প নিয়ে আস’, প্রধানমন্ত্রীর বরাতে বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
‘তিনি আশা করেন, আমাদের বিভিন্ন সেক্টর, কর্পোরেশন বা প্রাইভেট সেক্টর বা সরকার– বিভিন্ন জায়গায় তাদেরকে চাকরি-বাকরি দিয়ে রিহেবিলিটেশনের (পুনর্বাসন) একটা ব্যবস্থা করার জন্য।’
প্র্যাক্টিসের জন্য তহবিল
সারা বছর চর্চা করার জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করা হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য- খেলা আসলেই প্র্যাকটিস শুরু হয়। তারপর আর খবর নাই। তার কথা হলো যে খেলোয়াড় পেশাজীবী, সে সারা বছরই প্র্যাকটিস করবে। খেলোয়াড় তো নিজের পয়সায় করবে না, কেন করবে? তিনি চান, একটা ভালো তহবিল থাকবে। যেন এই তহবিলের আওতায় তারা সারা বছর প্র্যাকটিস করতে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (খেলোয়াড়) কর্তৃপক্ষ আছে, তারাই এটা করবে। সরকার শুধু টাকা দেবে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সরাসরি অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন এর জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে।’
তির, ধনুক যেন মরে না যায়
খেলা বলতে শুধু ক্রিকেট নয়, ফুটবল, হকি, ভলিবল, বাস্কেট বল, সব ধরনের খেলাকেই সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘শুটিং ও আর্চারিতেও আমাদের সম্ভাবনা আছে। সেখানে ইনটেনসিভ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি।’
এম এ মান্নান বলেন, ‘আর্চারির কথা বলতে গিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) এটাও বলেছেন, শুধু পশ্চিমা আর্চারি নয়। আমাদের এখানে তির, ধনুক, বল্লম রয়েছে। আমাদের সাওতালরা ব্রিটিশদেরকে তির, ধনুক দিয়ে তাড়াতে চেয়েছিল। সেই তির, ধুনকও যাতে মরে না যায় এবং বিকশিত হয়, সেজন্য তহবিল, প্রশিক্ষণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
পিডি/এসআর/এমকেএইচ