ধর্ষণের শিকার ফারজানার পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছে
ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ায় লোকলজ্জা ও ক্ষোভে বিষপানে আত্মহত্যা করা বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলেজছাত্রী ফারজানা আক্তারের পরিবারকে ধর্ষণকারীরা হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে বাকেরগঞ্জবাসী এ অভিযোগ করে। তাদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবারও (২০ জুন) ধর্ষণকারীদের পক্ষ থেকে ফারজানার পরিবারকে হুমকি দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন অভিযুক্তদের গ্রেফতারে কোনো ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও জানান তারা।
বাকেরগঞ্জবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালীদের সন্তান মো. তরিকুল ইসলাম, শাওন গাজী, শাওন ফরাজী, জোবায়ের, রাসেদ ও রাজিব ফারজানাকে ধর্ষণ করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয় মানববন্ধনে।
আরও পড়ুন> ধর্ষিত হওয়ায় নিজেকে শেষ করে দিলেন কলেজছাত্রী
তারা আরও অভিযোগ জানায়, ফারজানা ১৬ জুন মারা গেলেও বাকেরগঞ্জ থানা নানা টালবাহানার পর ১৯ জুন মামলা নেয়। ফারজানার ধর্ষণকারীরা এখনও এলাকায় অবস্থান করছে। কিন্তু বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অন্যদিকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ফারজানার ধর্ষণ ও হত্যা ভিন্নখাতে নেয়ার প্রচার চালাচ্ছে।
মানববন্ধনে মোজাম্মেল হোসেন মোহন বলেন, প্রশাসনকে টালবাহানা বন্ধ করে ফারজানার ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার করতে হবে। আমরা জানি, ধর্ষণকারীদের একজন এখনও তাদের বাড়িতে অবস্থান করছে। কিন্তু পুলিশ বলছে তারা আসামিদের খুঁজে পাচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসন বলতে পারবে না যে, ধর্ষণে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে তারা একবারের জন্যও অভিযান চালিয়েছে।
তিনি বলেন, অন্যদিকে ফারজানার পরিবারকে গতকালও হুমকি দেয়া হচ্ছে। তার পরিবার অসহায়। তারা নিঃস্ব বলে কি বিচার পাবে না? সেখানকার জনপ্রতিনিধিরা অঘোষিতভাবে ধর্ষণকারীদের পক্ষ নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মোহন।
মানববন্ধনে কথা বলেন জাহিদুল আলম ওয়াসিম মল্লিক, সোহরাব মজুমদার, লোকমান জোমাদ্দার, মো. আশিকুর রহমান খান, এইচ এম কেনান, আলমগীর হোসেন, মনিরুজ্জামান মনির, মিজানুর রহমান, শাহাদাৎ হোসেন, হাসিবুর রহমান, মিলন ফরাজীসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন রাতে প্রতিবেশির ফাঁকা বাড়িতে তুলে নিয়ে ফারজানা আক্তারকে ধর্ষণ করে বাকেরগঞ্জের কবাই এলাকার আব্দুল মতিনের ছেলে মো. রাজিব। এতে সহযোগিতা করে রাজিবের বন্ধু একই এলাকার তরিকুল ইসলাম, শাওন গাজী, শাওন ফরাজী, রাসেদ ও জোবায়ের। রাতভর ধর্ষণের পর সকালে ফারজানাকে বাড়ির সামনে ফেলে যায় তারা। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হওয়ায় ওই দিনই ক্ষোভে-অপমানে বিষপান করে ফারজানা। এরপর অসুস্থ ফারজানাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল ভর্তি করেন স্বজনরা। হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জুন মৃত্যু হয় তার।
পিডি/এমএসএইচ/এমএস