ছাড়পত্র নেই, ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে
রাজধানী ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তথা সামগ্রিক পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ঢাকা শহরে গড়ে প্রতিদিন সাড়ে পাঁচ হাজার টনেরও বেশি বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এসব বর্জ্যের সাড়ে তিন হাজার টন ডিএনসিসি ও অবশিষ্ট বর্জ্য ডিএসসিসি এলাকায় উৎপন্ন হয়। এই দুই সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ফেলার জন্য রাজধানীর আমিনবাজার ও মাতুয়াইলে দুটি বৃহৎ বর্জ্য নিক্ষেপ কেন্দ্র (ল্যান্ডফিল) রয়েছে।
এ ধরনের ল্যান্ডফিল স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক হলেও খোদ ডিএনসিসি তা মানেনি। তাদের পরিচালিত আমিনবাজারের ল্যান্ডফিল স্টেশন পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই নির্মিত হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার টনেরও বেশি বর্জ্য ফেলার কারণে ওই এলাকার লাখ লাখ মানুষ ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছেন। পরিবেশ অধিদফতর থেকে দূষণের ব্যাপারে দুই দফায় লিখিত নোটিশ দেয়া হলেও কর্ণপাত করছে না ডিএসসিসি।
শনিবার রাজধানীর আগাঁরগাওয়ে পরিবেশ অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে পরিবেশ অধিদফতর আয়োজিত ‘এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রমে গণমাধ্যমের সহযোগিতা বিষয়ক কর্মশালায়’ এসব তথ্য জানানো হয়। এতে সভাপতির বক্তব্য রাখেন অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহাম্মদ।
তিনি বলেন, সামনে বর্ষা মৌসুম। এ মৌসুমে আমিনবাজার ল্যান্ডফিলের বর্জ্য পানিতে মিশে নদী দূষণ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ল্যান্ডফিলটি পরিবেশসম্মত করার ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তা কামনা করছি। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমিনবাজারের বর্জ্যের কারণে পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে- এ নিয়ে বেশি বেশি প্রতিবেদন প্রচার করুন।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের একক প্রচেষ্টায় পরিবেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়। রাজধানীসহ সারাদেশের পরিবেশের উন্নয়নের জন্য ব্যক্তি, পরিবার ও সামাজিকভাবে গণসচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীরা ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, পরিবেশের উন্নয়নের জন্য আর্থিক জরিমানা সমাধান নয়। গণসচেতনতা গড়ে তুলতে পারলে অর্থাৎ সবাই পরিবেশ সচেতন হলে পরিবেশের উন্নয়ন হবে। এরপরও যদি কেউ আইন ভঙ্গ করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা যেতে পারে।
পরিবেশ অধিদফতরের চলমান এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ ও প্রচারের লক্ষ্যে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক এ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিচালক (প্রশাসন) মো. সাদেকুল ইসলাম। কর্মশালায় বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, বিধিমালা, পরিবেশ আদালত আইন ও হালনাগাদ এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রমসহ ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পরিচালক (মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) রুবিনা ফেরদৌসি।
বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল পাশা, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম সভাপতি কাওসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন ও পরিবশ অধিদফতরের অন্য কর্মকর্তারা। কর্মশালায় বিসিজেএফ সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এমইউ/বিএ/এমকেএইচ