পাসপোর্ট-ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছে
পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
অনেক ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশনে প্রবাসীদের হয়রানি করা হয়- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ইমিগ্রেশনে আমরা নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ট্রাভেল পাস নিয়ে অনেকে ফিরে আসছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের তথ্য দিচ্ছে যে, তারা বিভিন্ন দেশে দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সিরিয়া বা বাগদাদে যারা যুদ্ধ করেছে এ ধরনের লোকও আমাদের দেশে চলে আসতে পারে এমন তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে।
‘সেজন্য ট্রাভেল পাস নিয়ে যারা আসছেন, তারা কোনো জঙ্গি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল কি-না এটা নিশ্চিত হতে একটু যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তারা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত না অন্য দেশের সেটা নিশ্চিত হতেই একটু কড়াকড়ি করতে হচ্ছে। সঙ্গত, কারণেই ট্রাভেল পাসধারীদের একটু ঝামেলা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে হয়রানি করে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমরা পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাচ্ছি। কোথাও কোনো দুর্বলতা থাকলে সেগুলো সারিয়ে তুলতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে আনতে যাওয়ার সময় পাসপোর্ট না নেয়ার ঘটনাটা ঘটিয়েছেন বিমানের এক পাইলট। তাদের ইমিগ্রেশন অন্যভাবে হয়। তাদের পাসপোর্টে সিল দেয়া হয় না। একটা ডিক্লারেশন স্লিপ তাদের দেয়া হয়। স্লিপটা পাইলটরা ইমিগ্রেশনে জমা দেন। এমনকি যেখানে যান সেখানেও তারা শুধু স্লিপটা জমা দেন। ওই স্লিপেই তাদের সব ধরনের তথ্য থাকে। তারপরও পাইলটদের সঙ্গে পাসপোর্ট রাখার কথা। পাসপোর্টটা যখন যেখানে যেই চাইবেন তখনই তিনি সেটা দেখাতে বাধ্য।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই পাইলট জানিয়েছেন তিনি ভুলক্রমে পাসপোর্টটা নিয়ে যেতে পারেননি। সেজন্যই এ ঘটনা ঘটেছে। এখানে কার কার দুর্বলতা রয়েছে, সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রাথমিকভাবে সবার দৃষ্টি গেছে, ইমিগ্রেশন কীভাবে পার হলো। আমরা জেনেছি, ইমিগ্রেশনে পাইলট সঠিকভাবে স্লিপটি জমা দিয়েছেন। তার ফিঙ্গার প্রিন্টও নেয়া হয়েছিল সঠিকভাবে।’
‘তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল পাসপোর্টটা সঙ্গে আছে কি-না। কিন্তু ইমিগ্রেশনে যে কর্মকর্তা কাজ করছিলেন তারও উচিত ছিল পাসপোর্টটা দেখা। কিন্তু তিনি তা না করে গাফিলতি করেছেন। এ কারণে তাকে প্রথমেই বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে অন্য এক কর্মকর্তাকে সেখান খেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’
এ ক্ষেত্রে আর কার কার গাফিলতি রয়েছে এটি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমার মনে হয় আরও একটু কেয়ারফুল হলে এ ঘটনাটা ঘটতো না। তদন্ত কমিটির মূল্যায়নের পরে আমরা পুরো বিষয়টি বুঝতে পারব। সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ফজল মাহমুদ পাসপোর্ট ছাড়াই গত বুধবার ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়েছিলেন। কাতারের দোহার হাম্মাদ বিমানবন্দরে গিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীকে আনতে আরেকজন পাইলট পাঠানো হয়। ফিনল্যান্ড থেকে কাতার হয়ে শনিবার সকালেই দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘ইমিগ্রেশন কার্যক্রমটা বহুদিন থেকেই পুলিশের বিশেষ শাখা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এ কাজটা ইমিগ্রেশন বিভাগ দিয়ে করা যায় কি-না সে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’
এমইউএইচ/জেএইচ/এমএস