ঘরমুখো মানুষকে গুনতে হচ্ছে তিনগুণ ভাড়া
রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দূরপাল্লার বাস, মিনিবাস ও ট্রাকে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, কুমিল্লা ও নোয়াখালীর মানুষ একটু আরামে বাড়ি পৌঁছলেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের। সড়কে যানবাহন কম আর যানজট বেশি হওয়ার সুযোগে এ অঞ্চলে বাসের ভাড়া দুই থেকে তিনগুণ বেশি নেয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া গত দুইদিনে ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টিতে আটকা পড়েছে ঘরমুখো মানুষ। আর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় এবং সড়কে বাসের মহাজটে রাস্তা যেন ফুরায় না তাদের। মালিকরা টার্মিনাল থেকে বাস দূরে রেখে যাত্রীদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় করছেন।
তারা বলছেন, ঈদের সময় যাত্রী বেশি সেই তুলনায় যানবাহন খুবই কম। তাই একটু বেশি ভাড়া নিচ্ছি। কিন্তু তাদর কাছে কোনো ভাড়ার তালিকা নেই।
ময়মনসিংহগামী যাত্রী মো. আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ময়মনসিংহের ভাড়া সারাবছর দুই থেকে তিনশ’ টাকার মধ্যে। এখন ঈদের সময় ভাড়া গুনতে হচ্ছে পাঁচশ’ টাকার উপরে। গাড়ি মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরিয়ে রাস্তার ধারে কাকলি, বনানী এসব এলাকায় রেখে বলা হচ্ছে বাস নেই, যাত্রী বেশি। ভাড়াতো একটু বেশি দিতেই হবে। আমরাতো পড়েছি ঠেকায় বাড়িতে সবার সঙ্গে ঈদ তো করতে হবে।’
জামালপুরের যাত্রী আক্কাস আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকায় রিকশা চালানোর পর ঈদে বাড়ি যাচ্ছি ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ঈদ করার জন্য। অন্য সময় বাস ভাড়া তিনশ’র মধ্যে হলেও এখন কম করে ৫শত টাকা দিতে হবে, বাসের যাত্রীরা পড়েছে মহাবিপদে। কী আর করার ট্রেনে উঠতে পারিনি। বাড়িতো যেতে হবে।’
জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন সঙ্কট না থাকলেও বেশ কয়েকদিন ধরে কোনো কারণ ছাড়াই ভাড়া দুই তিনগুণ বেড়েছে। গাড়িভাড়া কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
টাঙ্গাইলের যাত্রী মো. আরিফ বিল্লাহ জাগো নিউজকে জানান, ‘টাঙ্গাইল এলাকার এসি গাড়িতে অন্য সময় ২৬০ টাকা ভাড়া নেয়া হয়। ঈদের সময় এসব পরিবহনের ভাড়া দুই-তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে।’
টাঙ্গাইলের কালিহাতির বাসিন্দা মো. মাসুদ আলম বেসরকারি কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে ঈদের আগেরদিন বাড়িতে গেছেন। বাসের ভাড়া কেমন নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশে ভাড়া কখনও কমে শুনেছেন। এখন ডবলের চেয়ে বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষ তিনগুণের বেশি। ২০ টাকার ভাড়া এখন নিচ্ছে ১০০ টাকা, তাহলে কত বেশি।’
এদিকে রাজধানীর রাস্তাগুলোতে বাস কম থাকায় ভাড়া গুনতে হচ্ছে বেশি। দুই-তিনগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে মোহাম্মদপুর, গাবতলী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ডের লোকাল বাসগুলোতে। মোহাম্মদপুর থেকে গুলিস্তান মতিঝিলের নিয়মিত ভাড়া ছিল ২০ টাকা, এখন বাস ভাড়া হয়ে গেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত।
মহাসড়ক ছাড়া যে জায়গায় রিকশা ভাড়া ছিল বিশ টাকা এখন রিকশাচালক চাচ্ছে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ টাকা। তার পরও দীর্ঘসময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের।
মো. আফজাল হোসেন নামে এক যাত্রী জাগো নিউজকে জানান, ভোরে ঘুম থেকে উঠে গাড়ির জন্য শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় দেখলাম সদরঘাটগামী বাসগুলো ফার্মগেট, শাহবাগ ও গুলিস্তানের জন্য ৫০ টাকা করে ভাড়া আদায় করছে। আর সদরঘাট ৬০ টাকা। ২৫ থেকে ৩০ টাকার ভাড়ার এ অবস্থা। কারও কোনো মাথা ব্যথা নেই। যাত্রীরা জিম্মি।
এফএইচ/এনডিএস/এমএস
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ জামুকা-মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠন
- ২ শাহজালালে লাউঞ্জ চালু করায় প্রশংসা করলেন বিমান উপদেষ্টা
- ৩ সংবিধান সংশোধনের একমাত্র অধিকার পার্লামেন্টের: হাসান আরিফ
- ৪ পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ
- ৫ ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রবাসীদের পাসপোর্ট পৌঁছানো হবে: আইন উপদেষ্টা