জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে ঘরমুখো মানুষ
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখো যাত্রীরা ঢাকা ছাড়ছেন। কিন্তু বাধ সাধে নির্ধারিত ট্রেনগুলো যথাসময়ে স্টেশন থেকে না ছাড়ায়। এর মধ্যে টিকিটের তুলনায় যাত্রী কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা সত্ত্বেও যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠেই গন্তব্যে রওয়ানা হয়েছেন। যারা রাত জেগে কষ্ট করে অগ্রিম টিকিট কেটেছিলেন, তাদেরও দুর্ভোগের কমতি ছিল না।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশনে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেসের এ চিত্র দেখা গেছে। ট্রেনের ভেতরে জায়গা না পেয়ে ছাদে চড়ে ঢাকা ছাড়ছেন ঘরমুখো যাত্রীরা। আবার অনেককেই ইঞ্জিনে চেপেও ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে।
এ দিন ৫৩ মিনিট দেরিতে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছে একতা এক্সপ্রেস। কিন্তু রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন থেকেই ট্রেনটি ভেতর ও ছাদ যাত্রীতে পরিপূর্ণ ছিল। জায়গা না থাকায় আগে থেকেই ট্রেনের বেশকিছু দরজা বন্ধ করে দেয় ভেতরের যাত্রীরা। বিমানবন্দর স্টেশনে অবস্থানরত যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে না পেরে দরজা ধাক্কাতে থাকেন। জোর করে কিছু যাত্রী উঠতে গেলে ভেতরে যাত্রীরা কেউ কেউ আঘাত পান। আঘাত পেয়ে একজন নারী যাত্রীকে কাঁদতেও দেখা যায়।
ভেতরে উঠতে না পেরে অনেকেই ছাদে ওঠার চেষ্টা করেন। তবে সেখানেও জায়গা হচ্ছিল না অনেকের। এরপরও কিছু যাত্রী জোর করে ছাদে উঠে গেলে জায়গা না পেয়ে স্টেশনের টিনের চালায় আশ্রয় নেন। সেখান থেকে বারবার তারা ট্রেনের ছাদে জায়গার জন্য চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন।
এছাড়া ভেতরে ও ছাদে জায়গা না পেয়ে বেশ কয়েকজন ট্রেনের দুই বগির মাঝখানে এবং ইঞ্জিন বগিতে দাঁড়িয়ে যাত্রা করেন। স্টেশনের অবস্থানরত অন্য গন্তব্যের যাত্রীরা তাদেরকে নামতে বললেও তারা তা কর্ণপাত করেননি।
ট্রেনের ইঞ্জিনে করে যমুনা সেতু পর্যন্ত যাবেন ইউনুস। ইঞ্জিনে উঠেছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাদে ওঠার জায়গা নেই।’ তাহলে নেমে পড়েন, এ কথা বললেন তিনি বলেন, ‘যাওয়া লাগবে না?’
ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে একটি ব্যাগসহ বসে থাকা ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তির কাছে গন্তব্য কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাঙ্গাইল। এভাবে যাচ্ছেন কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে মাথা নিচু করে রাখেন। এ সময় পাশের একজন জানালেন, বাড়ি যেতে হবে না? ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ নিষেধ রয়েছে জানেন কি না? উত্তরে বলেন, ওই সব তারা বলেই। জীবনের ঝুঁকি আছে জানি। তারপরও আমাদের বাড়ি যেতে হবে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে।
পিডি/এএইচ/পিআর