নীলসাগরে আজও ভোগান্তি
গতকালের (রোববার) মতো আজও শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের। রোববার পাঁচ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। নীলসাগর ট্রেন আজ (সোমবার) সকাল ৮টায় ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় ট্রেন ছাড়েনি। এর সম্ভাব্য ছাড়ার সময় দেখাচ্ছে বেলা সাড়ে ১২টায়।
এদিকে লালমনি স্পেশাল ছাড়ার কথা ছিল ৯টা ১৫ মিনিটে। সেটিও নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যায়নি। ট্রেনটির ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেখাচ্ছে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট। এছাড়া রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনেরও সামান্য শিডিউল বিপর্যয় দেখা গেছে। ট্রেনটির ছাড়ার কথা ছিল সকাল ৬টায়। ছেড়ে গেছে সাড়ে ৬টায়।
এভাবে তিন থেকে চার ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেন ছাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সোমবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে দেখা গেছে এমন চিত্র।
ভোগান্তির কথা জানালেন নীলসাগর ট্রেনের যাত্রী রাজ্জাক। তিনি জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে এসেছেন। ৮টায় ট্রেন ছাড়ার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময় ট্রেন ছাড়েনি। ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেখাচ্ছে বেলা সাড়ে ১২টা।
ট্রেনের এ যাত্রী বলেন, সাড়ে চার ঘণ্টা বিলম্ব। কী বিরক্তিকর অবস্থা! মানুষ আধা ঘণ্টা-এক ঘণ্টা বসে থাকতে পাড়ে কিন্তু স্টেশনে সাড়ে চার ঘণ্টা বসে থাকা যায়? সরকারের লোকজন মিডিয়ায় বলছে- এবার ট্রেন বিলম্ব হবে না। তাহলে এই যে বসে আছি এটা কী? এখন সাড়ে ১২টা বলছে এ সময় ছাড়বে কি না সন্দেহে আছে।
এদিকে বিলম্বে ট্রেন ছাড়ার কারণে সকাল থেকে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনে। প্রতিটি প্লাটফর্মে মানুষ আর মানুষ। ব্যাগ, লাগেজ হাতে নিয়ে সবাই অপেক্ষা করছেন নির্ধারিত ট্রেনের জন্য। অনেকে আবার দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছেন প্লাটফর্মের মেঝেতে।
এমনই একজন রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী খলিল। তিনি বলেন, ৯টায় ট্রেন ছাড়ার কথা ১১টায়ও ছাড়ে নাই। কখন ছাড়বে আল্লাহ ভালো জানে। বৌ-বাচ্চা নিয়ে ট্রেনের অপেক্ষা করছি।
ট্রেন বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, ঈদে যাত্রীচাপ বেশি তাই একটু বিলম্ব হচ্ছে। যেসব ট্রেন বেশি দূরত্ব থেকে আসছে সেসব বেশি দেরি হচ্ছে। কারণ প্রতিটি স্টেশনে যাত্রী ওঠানামায় সময় বেশি লাগছে। আর যে ট্রেনগুলো দেরিতে কমলাপুর আসছে, সে ট্রেনগুলো ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে বিলম্বের সংখ্যা খুবই কম। ভোর থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ২২টি ট্রেন ছেড়েছে। এর মধ্যে তিনটি ট্রেন বিলম্ব হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রেন ছাড়তে যেন আর বিলম্ব না হয় আমরা সে চেষ্টাই করছি। আজ চারটি ঈদ স্পেশালসহ মোট ৫৬টি ট্রেন ছাড়বে। আশা করছি বিলম্ব তেমন হবে না।
ট্রেনে যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরা বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, যাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াও রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের যাত্রী হয়রানি দেখা গেলেই তা প্রতিরোধ করা হবে। সব মিলিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনে সার্বিক সহযোগিতার চেষ্টা করছি আমরা।
এসআই/বিএ/জেআইএম