‘শঙ্কা নিয়ে’ স্বস্তির ঈদযাত্রা
পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির জন্য রাজধানী ছাড়তে শুরু করছেন নগরবাসী। কেউ সড়ক পথে, কেউ বা রেল ও নৌ পথে। অনেকে বিমানেও যাচ্ছেন। প্রতিবছরই সড়কপথে যানজট ভোগান্তির কারণে ঈদযাত্রা আনন্দের বদলে বিষাদময় হলেও এবার এখন পর্যন্ত সে ধরনের খবর মেলেনি। তবে ভোগান্তির ‘শঙ্কা’ নিয়ে স্বস্তিতেই ঢাকা ছাড়ছেন নগরবাসী।
শুক্রবার সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, কল্যাণপুর, গাবতলী বাস কাউন্টারগুলোতে মানুষের ভিড়। আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল গাবতলীতে মানুষের ভিড়। বাবা কিংবা মায়ের হাত ধরে সন্তানেরা কাউন্টারে বসেছে। প্রায় সবার হাতেই ব্যাগ। নিকট দূরত্বের মানুষের আনাগোনা বেশি গাবতলীতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কল্যাণপুর ও গাবতলী বাস কাউন্টার থেকে সকাল ৮ থেকে ৯টা, বেলা ২ ও ৩ টার দিকে বিভিন্ন রুটের বাসযাত্রীদের নিয়ে যথা সময়ে ছেড়েছে বাস। যাত্রাপথে এখনও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি।
গাবতলী হানিফ বাস কাউন্টারে কথা হয় নওগাঁও রুটের যাত্রী শামীম হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়ে শিকড়ে ফিরছি। সড়ক মেরামত হয়েছে, নতুন ফ্লাইওভার নির্মাণ হয়েছে, এবার যানজট নয় স্বস্তির যাত্রা হবে বলা হচ্ছে। কিন্তু মনের মধ্যে এখনও অতীতের ভোগান্তির প্রভাবটাই বেশি। শঙ্কা কাটছেই না। না জানি, সড়কে যানজটে পড়ি।’
ঢাকা পিরোজপুর রুটের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের যাত্রী সুরভী আক্তার বলছিলেন, সকালে মন্ত্রী আসছিলেন। বলে গেলেন সড়কে এবার যানজট নেই। স্বস্তির যাত্রা হবে। মন্ত্রী প্রতিবছরই তো বলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যানজটে নাকাল হয় ঈদযাত্রীরা। আশা করছি, এবার মন্ত্রীর কথা মতো যানজট থাকবে না।
এসআর পরিবহনের রংপুরের যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরিবার নিয়ে এবার বাড়ি যাচ্ছি। মেয়ের মনে অনেক আনন্দ টের পাচ্ছি। অনেকদিন পর দাদা-দাদির দেখা পাবো। তাছাড়া নানার বাড়িও কাছেই। শুধু রাস্তায় যানজটটা না হলেই হয়।
দুপুরে গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল মোবাইল কোর্টে ভিজিলেন্স টিমের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের ঈদযাত্রা হবে আগের তুলনায় স্বস্তিদায়ক। সড়কে কোথাও যানজট নেই। আশঙ্কাও নেই। তবে আজ থেকে গাড়ির চাপ বাড়বে। মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, বিআরটিএ ভিজিলেন্স টিম, মোবাইল কোর্ট কাজ করে যাচ্ছে যেন ঈদে মানুষ ভালোভাবে বাড়ি যেতে পারে। সড়কে যাতে যানজট না হয় সেজন্য গাড়ি চালকদের দায়িত্ব বেশি। চালকরা যাতে অধৈর্য না হন, রমজানের সংযম যেন সড়কে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ধরে রাখেন, সেজন্য মালিকপক্ষের উচিত চালকদের কাউন্সেলিং করা।
‘পরিবহনে চাঁদাবাজি যাতে না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। চাঁদাবাজি হলে আমাদের র্যাব, পুলিশ, মোবাইল কোর্ট, ভিজিলেন্স টিমকে জানালে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে আমাকে জানান ব্যবস্থা নেব’-যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমানের নেতৃত্বে গাবতলীতে বিআরটিএ কর্তৃক পরিচালনা করা হচ্ছে ভিজিলেন্স টিম। ভিজিলেন্স টিমের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, কোনো যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে কি-না তা মনিটরিং করা হচ্ছে। যাত্রী হয়রানি, বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জেইউ/জেএইচ/পিআর