দর কষে জিততে হয় বঙ্গবাজারে
রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার বঙ্গবাজার। একসময় বাংলাদেশে আসা বিদেশি পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা করতেন এই বাজারে। এখন বিদেশিরা কম আসেন, তবে এখনও জমজমাট বঙ্গবাজার।
প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় বন্ধ হলেও ২০ রোজার পর থেকে রাত ২টা পর্যন্ত এ মার্কেট খোলা থাকছে। মার্কেটটি মূলত তিন ভাগে বিভক্ত। তা হলো আদর্শ হকার্স মার্কেট, মহানগরী ও বঙ্গ গুলিস্তান মার্কেট। রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে বঙ্গবাজারের আদর্শ হকার্স মার্কেটে গিয়ে দেখা গেল ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। মার্কেটের ছোট ছোট ১৫ থেকে ২০ স্কয়ারফিটের প্রতিটি দোকানে কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ জন করে বাইরে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছিলেন।
দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সারাবছর দেশের সব বিভাগীয় শহরে এখান থেকেই পাইকারি কাপড় যায়। কিছু খুচরাও বিক্রি হয়। তবে শবেবরাতের পর থেকে এ মার্কেটে আর পাইকারি বিক্রি হচ্ছে না। সবাই নিজের মতো খুচরা বিক্রি করছে। গরম থাকা সত্ত্বেও অন্যবারের চেয়ে এবার ক্রেতা অনেকটা বেশি।
দেখা গেল, পাঞ্জাবি ও ছোট ছেলেমেয়েদের কাপড়ের দোকানে অনেক ভিড়। দোকানগুলোতে সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে। ছোটদের পাঞ্জাবি ২০০ থেকে ১,৫০০ টাকার মধ্যে। পায়জামা ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। ৩০০ টাকায় ওড়নাও পাওয়া যাচ্ছে।
মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে মেয়ে শিশুদের পার্টি ফ্রক ১,২০০ থেকে ৩ হাজার টাকা, লেহেঙ্গা ১,২০০ থেকে ২,০০০ টাকা। মেয়ে শিশুদের স্কার্ট ৩৫০ থেকে ১,০০০ টাকা, টপস বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ছেলে শিশুদের টি-শার্ট হাফপ্যান্ট সেট ৫০০ থেকে ১,২০০ টাকা, সিঙ্গেল টি-শার্ট ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা, শার্ট ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহানগরী বঙ্গ মার্কেটের মেঘনা ফ্যাশনসের স্বত্বাধিকারী রাধেশাম নন্দী জাগো নিউজকে বলেন, এবার প্রচণ্ড গরম পড়েছে। ঈদের দিনগুলোতেও গরম থাকার কথা। তাই আরামদায়ক পোশাক হিসেবে মেয়ে শিশুদের জন্য পিওর কটনের পোশাকের চাহিদা বেশি। মেয়ে শিশুদের পোশাকের মধ্যে আনারকলি জামা, গাউন, লেহেঙ্গা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অনেকে ছোটদের জন্য ফ্রক ও স্কার্টও নিচ্ছেন। ছেলে ও মেয়ে শিশুদের জন্য নজিন্স প্যান্ট, নরমাল প্যান্ট, থ্রি-কোয়ার্টার সেট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, গেঞ্জি, শার্ট ইত্যাদি নিচ্ছে ক্রেতারা।
বঙ্গ গুলিস্তান মার্কেটের ব্যবসায়ী ফরহাদুল ইবনে ওমর বলেন, তরুণীরা গাউন, ট্রেইল, লম্বা, নন্দিনী, বেলবেট, স্কার্ট, লম্বা কামিজ ইত্যাদি পছন্দ করছে। এ ছাড়া গাউনের মধ্যে ফ্লোর টাচ গাউনের চাহিদা বেশি।
জামা-কাপড়ের দাম কেমন জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ থেকে আসা এস এম মাসুম বিল্লাহ বলেন, বঙ্গবাজারে প্রতি বছর আসি সাশ্রয়ী দামে কেনাকাটা করতে। ঢাকার অন্যান্য মার্কেট থেকে এখানকার দাম তুলনামূলক কম। তারা প্রথমে দাম একটু বেশি চায়। তবে দর-কষাকষি করে সহনীয় দামেই জামা পাওয়া যাচ্ছে।
তবে ভারত কুমার চাকমা নামে আরেক ক্রেতা বলেন, বাচ্চাদের পোশাকের দাম এবার এখানে অনেক বেশি। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছুটা নিরূপায় হয়ে বেশি দামেই পোশাক কিনতে হচ্ছে।
এআর/জেডএ/এমএস