সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে বাস না থামানোর নির্দেশ
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এছাড়া সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে বাস না থামানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন।
আইজিপি বলেন, ঈদে মহাসড়কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোনো যানবাহন থামানো যাবে না।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত এক সভায় সভাপতিত্ব করেন আইজিপি।
সভায় মহাসড়কের চাঁদাবাজি বন্ধে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি। এজন্য হাইওয়ে ও থানা পুলিশ, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা এবং কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
আইজিপি মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন। এছাড়া মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইক ইত্যাদি যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সভায় পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শপিংমলে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মার্কেটে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে নিরাপত্তা তল্লাশি এবং বড় বড় শপিংমলে আর্চওয়ে ব্যবহারের নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাত স্থলে সুইপিং এবং আর্চওয়ে স্থাপনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাতস্থলের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ, অজ্ঞান ও মলম পার্টির অপতৎপরতা বন্ধ এবং চুরি ও ছিনতাই রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে মেট্রোপলিটন, জেলা, হাইওয়ে ও নৌপুলিশ সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সভায় ব্যাংক ও অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মানি এস্কর্ট প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আইজিপি আরও বলেন, ঈদের ছুটিতে বসতবাড়ি, ফ্ল্যাট এবং অ্যাপার্টমেন্টে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টহল বাড়াতে হবে। সকল প্রকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং কেপিআইসমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। পর্যটন স্পট বিশেষ করে বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক, সিনেমা হল ও অন্যান্য জনসমাগমস্থলে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ট্যুরিস্ট স্পটসমূহে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করবে।
আইজিপি জঙ্গি ও উগ্রপন্থীদের তৎপরতা রোধে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতাসহ অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া তিনি মাদক চোরাচালান ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা ছবি আপলোড করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টাকারীদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।
সভায় আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সবাই প্রিয়জনের সঙ্গে নিরাপদে ঈদ উদযাপন ও আনন্দ উপভোগ করতে সক্ষম হব।
এআর/এমবিআর/পিআর