তারিখ পরিবর্তন করে দই তৈরি করছিল ‘রস’
মেঝেতে খালি অবস্থায় পড়ে রয়েছে মিষ্টি ও দই। সেই মিষ্টিতে ভনভন করছে মাছি। পাশেই রাখা ঘি তৈরির ক্রিম। সেই ক্রিমে ফড়িং। একদিন পরের তারিখে তৈরি হচ্ছে দই।
এমন নোংরা চিত্র রাজধানীর নামিদামি একটি মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান রস-এর। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রস মিষ্টির কারখানায় বিশেষ অভিযানে এ অবস্থা স্বচক্ষে দেখেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। এ অপরাধে ‘রস’ মিষ্টির কারখানাকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন > আমাদের ভুল হয়েছে : কানিজ আলমাস
ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অভিযান পরিচালনা করেন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল। বাজার অভিযানের সার্বিক সহযোগিতা করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-১১ (এপিবিএন)-এর সদস্যরা।
মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার জাগো নিউজকে বলেন, ‘রস’ নামিদামি একটি ব্র্যান্ড। কিন্তু তাদের কারখানার অবস্থা স্বচক্ষে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। তারা যে প্রক্রিয়ায় মিষ্টি তৈরি করছেন তা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। মিষ্টি মেঝেতে খালি অবস্থায় রেখে দেয়া হয়েছে। ঘি তৈরির ক্রিমে ঘাস ফড়িং। নামি এই প্রতিষ্ঠানের কারখানা মাছিতে ভরা। মিষ্টিতে মাছি। এখানেই শেষ নয়, এক মাস আগের মিষ্টি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে ফ্রিজে।
আরও পড়ুন > মানহীন ৫২ পণ্য বিক্রি করায় জরিমানা
তিনি আরও বলেন, অবাক করার বিষয় হলো আজ ২১ মে। কিন্তু তারা উৎপাদনের তারিখ দিয়েছে ২২ মে। এসব কাজ করে তারা ভোক্তা অধিকার ক্ষুণন করেছে, যা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয়। এ অপরাধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটিকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভোক্তা অধিদফতরের এ কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু ‘রস’ একটি নামিদামি প্রতিষ্ঠান তাই তাদের প্রতি ভোক্তার প্রত্যাশা অনেক। তবে তারা যে পরিবেশে মিষ্টান্ন তৈরি করছে তা তাদের ব্র্যান্ডের সঙ্গে মানায় না। এজন্য কারখানার মান যথাযথ করার জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ধরনের অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী বড় অংকের জরিমানাসহ কারখানা সিলগালা করে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন > ‘পারসোনায় যাওয়ার আগে দুইবার চিন্তা করুন’
এ বিষয়ে কারখানাটির দায়িত্বরত ম্যানেজার বলেন, আমরা নিজে মিষ্টি রাখি না। তবে অনেক সময় বেশি হলে রাখা হয়। একদিন পরের উৎপাদন তারিখ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজ রাতে এ দই সরবরাহ করা হবে বলেই আগামীকালের তারিখ দেয়া হয়েছে।’
এক মাস আগের বাসি মিষ্টি প্রসঙ্গে বলেন, ফ্রিজে কতদিন রাখা যায় এটি দেখতে আমরা এক মাস আগের মিষ্টি সংরক্ষণ করেছি। আমরা কোনো বাসি মিষ্টি সরবরাহ করি না। মিষ্টিতে মাছি বসার বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি।
এসআই/এসআর/জেআইএম