রোহিঙ্গাদের ১ হাজার ৩৮২ কোটি অনুদান বিশ্ব ব্যাংকের
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ১ হাজার ৩৮২ কোটি ২৯ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। বুধবার (৮ মে) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই অনুদান গ্রহণ করে বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মনোয়ার আহমেদ। বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে এতে সই করেন ব্যাংকটির বাংলাদেশ ও ভুটানের অ্যাক্টিং কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যানডান চেন।
রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশ কিছু আর্থিক সাহায্য পেলেও এর স্থায়ী সমাধানে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশেষ কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এ রকম প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সমস্যা স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব।
তবে সে ধরনের কোনো পদক্ষেপের কথা জানাননি বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের অ্যাক্টিং কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যানডান চেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার উদারতার সঙ্গে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। এই সঙ্কটের কারণে রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয়দাতাদের চাহিদাও প্রচুর তৈরি হয়েছে। প্রকল্পটি এই অভিবাসন সঙ্কটকে তুলে ধরছে। বাংলাদেশ সরকারকে সার্বিকভাবে আরও শক্তিশালী করতে পরিকল্পনা, সমন্বয় ও জরুরি পরিস্থিতিতে আরও সাহায্য প্রদান করা হবে।’
রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেন, ‘১৯৭৮-৭৯, ১৯৯১-৯২ এবং ২০১৬ সালের অক্টোবরে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। ২০১৭ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভালোবাসা ও মানবিকতার কারণে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য আবারও সীমানা উন্মুক্ত করে দেন। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১০ লাখের অধিক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশের ফলে বাংলাদেশের সার্বিক প্রবৃদ্ধির ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। জলবায়ু ও পরিবেশ, জীব-বৈচিত্র্য ও স্থানীয় পরযায়ের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামোর ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হচ্ছে।’
‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় মাল্টি-সেক্টর’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রোহিঙ্গাদের এই অর্থ সাহায্য দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক। এর আওতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বহুমুখী ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র নিমার্ণ, ২০০ কিলোমিটার রাস্তা, ২ লাখ মানুষের পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা করা, দেড় হাজার সড়ক বাতির ব্যবস্থাসহ বেশকিছু কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। প্রকল্পের অর্থায়ন ২০২২ সালের ৫ মার্চ শেষ হবে। অনুদানের অর্থ হওয়ায় এই টাকা ফেরত দিতে হবে না।
পিডি/এমবিআর/পিআর