৩০ হাজার টাকা না দেয়ায় রোখসানার প্রাণটাই নিয়ে গেল সে
খুনি সোহেলের সঙ্গে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী আবুল কাশেমের সম্পর্কটা মামা-ভাগিনার। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে মামার অনুপস্থিতির সুযোগে বাসায় ঢুকে আবুল কাশেমের স্ত্রী রোখসানা বেগম মনির কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে ভাগিনা সোহেল। তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছুরিকাঘাতে খুন হন রোখসানা।
খুনী সোহেল চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারীর ঈদ পুকুরিয়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় কোতোয়ালি থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।
আমেনা বেগম জানান, খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী আবুল কাশেম। তাকে ‘মামা’ বলে ডাকতেন চন্দনাইশের সোহেল। সেই সূত্রে তারা মামা-ভাগিনা। সেই ভাগিনা সোহেল মঙ্গলবার দুপুরে যান মামা আবুল কাশেমের বাসায়। কোতোয়ালি থানার কোরবানীগঞ্জের বাইন্নাপট্টি এলাকার আল আমিনের মালিকানাধীন ভবনে থাকেন মামা আবুল কাশেম। সোহেলের জানা ছিল, দুপুরে আবুল কাশেমসহ কোনো পুরুষ বাসায় থাকে না। বাসায় গিয়ে সোহেল গৃহিণী রোখসানা বেগম মনির কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে বসেন। রোখসানা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহেল প্রাণনাশের হুমকি দেন। মেরে ফেললেও কোনো টাকা দেবেন না বলে জানিয়ে দেন রোখসানা। এরপর সোহেল রোখসানাকে ছুরিকাঘাত করেন। ওই সময় ঘরে আসে গৃহকর্মী। গৃহকর্মীকে সোহেল আটকে রাখেন বাথরুমে।
রোখসানার মৃত্যু নিশ্চিত হলে সোহেল ঘর থেকে ৩২ লাখ টাকার ডিও লেটার, ল্যাপটপ, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ব্যাগে ভরে নেন। বাসা ত্যাগের আগে খুনের আলামত নষ্ট করার জন্য আগুন ধরিয়ে দেয় রোখসানার রুমে। পালানোর সময় মুখোমুখি হন নিহত রোখসানার ছেলে আবদুল আজিজের। আবদুল আজিজ সোহেলকে চিনে ফেললে তাকেও হত্যা করার জন্য ছুরিকাঘাত করেন সোহেল। আজিজ চিৎকার দিয়ে দৌঁড়ে নিচে চলে যায়। তার চিৎকারে প্রতিবেশী আবদুস সোবহান এগিয়ে এলে তাকেও আঘাত করেন সোহেল।
খুন করে সোহেল প্রথমে আত্মগোপন করেন খাতুনগঞ্জে। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বের হয়ে চলে যান মইজ্যারটেক। ওই এলাকায় ভাড়া করেন নতুন বাসা। সেখান থেকেই কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ জোন) শাহ মো. আবদুর রউফ, অতিরিক্ত কমিশনার নোবেল চাকমা, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসআর/পিআর