বিমানের উড়োজাহাজ আছে রুট নেই
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একসময় পাঁচটি ডিসি-১০ দিয়ে ২৮টি আন্তর্জাতিক রুট পরিচালনা করত। বর্তমানে ১৩টি অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে মাত্র ১৫টি আন্তর্জাতিক রুট। একের পর এক রুট হারানোর কারণ হিসেবে দুর্নীতি ও অনিয়মকে দায়ী করছেন অনেকে। তাদের মতে, বিমানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছে একপ্রকার নতিস্বীকার করে বসেছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন > বোর্ডের সিদ্ধান্ত আমলে নিচ্ছে না বিমান
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বহরে নতুন নতুন এয়ারক্রাফট যুক্ত হলেও ২০১৩ সালের পর বিমান কোনো নতুন রুট চালু করতে পারেনি। বরং কয়েকটি রুট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিমানের মুখপাত্র শাকিল মেরাজ জাগো নিউজকে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান। এখানে বাস্তবতার আলোকে সব সিদ্ধান্ত নিতে হয়। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে বিগত কয়েক বছর কোনো নতুন রুট খোলা সম্ভব হয়নি। তবে নিকট ভবিষ্যতে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক রুটে ডানা মেলবে বিমান। এর মধ্যে জুনে গুয়াংজু এবং অক্টোবরে মদিনা রুটে ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শাকিল মেরাজ আরও বলেন, বর্তমানে বিমানের বহরে ১৩টি উড়োজাহাজ থাকলেও নতুন প্রজন্মের আরও দুটি ড্রিমলাইনার আসছে জুলাই ও সেপ্টেম্বরে। সহসাই বিমানের বহরে যুক্ত হচ্ছে দুটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ। এছাড়া এ বছর হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আসবে আরও দুটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ।
জানা গেছে, প্রায় ৪৭ বছর আগে জন্ম নেয়া বিমানে নতুন উড়োজাহাজ থাকার পরও সে তুলনায় রুট বাড়ানো যায়নি। অপরদিকে মাত্র নয়টি ছোট ছোট উড়োজাহাজ দিয়ে ১৫টি রুট পরিচালনা করছে বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা। শুধুমাত্র অনটাইম পারফরমেন্সের কারণে বর্তমানে এয়ারলাইন্সটি এখন দেশে-বিদেশে বেশ জনপ্রিয়।
ইউএস-বাংলার মুখপাত্র কামরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে আমাদের বহরে নয়টি উড়োজাহাজ থাকলেও আগামী মাসে আরও দুটি বোয়িং ৭৭৭ যুক্ত হবে। নতুন বোয়িং যুক্ত হলে রুটের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সরকারের দেয়া বিমানবাহিনীর একটি ডিসি-৩ এয়ারক্রাফট দিয়ে এর যাত্রা শুরু। ১৯৭২ সালের ৭ মার্চ চট্টগ্রাম ও সিলেটে এবং ৯ মার্চ যশোরে একটি ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে আকাশে ওড়ে বিমান। এভাবেই শুরু হয় বিমানের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম। এরপর থেকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি।
অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের তিনদিন আগে অর্থাৎ ওই বছরের ৪ মার্চ ১৭৯ জন যাত্রীকে লন্ডন থেকে ঢাকায় নিয়ে আসার মধ্য দিয়ে বিমানের প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হয়।
আরও পড়ুন > এক বছরে বিমানের লোকসান ২০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা
২০০৭ সালে বিমান পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৮ সালে নতুন প্রজন্মের ১০টি এয়ারক্রাফটের জন্য বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে বিমান। ১০টি এয়ারক্রাফটের মধ্যে বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর চারটি, দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও চারটি বোয়িং ৭৮৭।
আরএম/এমএসএইচ/এমএআর/জেআইএম