ব্যবসায়ীর স্ত্রী খুন, সন্দেহভাজন ‘হত্যাকারী’ আটক
চট্টগ্রাম মহানগরীর কোরবানীগঞ্জ এলাকায় বাসায় ঢুকে ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে খুনের ঘটনায় ‘হত্যাকারী’ সন্দেহে সোহেল (৩৭) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি একাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে তাকে কর্ণফুলী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি জাগো নিউজকে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।
এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে সিএমপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে নগর পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা বলেন, ‘প্রতিবেশী ও তাদের স্বজনের বক্তব্য পর্যালোচনা করেছে পুলিশ। তাতে মনে হচ্ছে হত্যাকারী তাদের পূর্বপরিচিত। একজন ব্যক্তিই এ খুনের সঙ্গে জড়িত। কেন এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে, কোনো শত্রুতা ছিল কি না-সেটা তদন্তে বের হবে।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী আবুল কাশেমদের গৃহকর্মী ইয়াসমিন পুলিশকে জানান, মঙ্গলবার দুপুরে অন্য বাসায় কাজ শেষে আবুল কাশেমের বাসায় যান তিনি। বাসায় ঢুকে দেখতে পান, কালো রঙের গেঞ্জি ও প্যান্ট পরা এক ব্যক্তি রক্তমাখা ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। তার মুখে দাড়ি ছিল। ইয়াসমিন ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তি তাকে ধরে ফেলেন। ইয়াসমিন কাজের বুয়া পরিচয় দেন এবং সেই ব্যক্তির পা জড়িয়ে ধরে তাকে হত্যা না করতে অনুরোধ জানান।
ইয়াসমিন আরও জানান, হত্যার পরে ওই ব্যক্তি প্রথমে বিছানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পুরো ঘর ধোঁয়ায় ভরে যায়। সে সময় আবুল কাশেমের ছেলে আজিজ বাসায় ঢোকেন। সঙ্গে সঙ্গে খুনি তাকে পেছন থেকে ছুরি মারেন। এরপর আজিজ ও ইয়াসমিনকে একঘরে নিয়ে যান, সেখানেই রোকসানার মরদেহ পড়ে ছিল। তিনি সবাইকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন এবং রান্নাঘরে গিয়ে কিছু কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় গালাগালি করছিলেন।
পরে আজিজ দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলে ওই ব্যক্তিও দ্রুত চলে যান। যাওয়ার সময় প্রতিবেশী সোবহানকেও ছুরিকাঘাত করেন সেই ব্যক্তি। ইয়াসমিন দ্বিতীয় তলার বাসায় গিয়ে পুরো ঘটনা জানালে সবাই এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
নিহত রোকসানা বেগম (৪৫) খাতুনগঞ্জের গম আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এম এ কাশেম ট্রেডিংয়ের মালিক আবুল কাশেমের স্ত্রী।
ব্যবসায়ী কাশেমের ভাগ্নে হাসান মুরাদ সাংবাদিকদের জানান, দুপুরে দোকানে নামাজ পড়ার প্রস্তুতি নেয়ার সময়ই তারা কাসেম সাহেবের বাসায় ডাকাত আক্রমণ করেছে বলে খবর পান। পরে দ্রুত বাসায় গিয়ে দেখেন রোকশানা বেগম রক্তাক্ত অবস্থায় খাটের পাশে পড়ে আছেন। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে আছে তার ছেলে আজিজও। এরই মধ্যে রোকসানার মৃত্যু হয়। আজিজকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং ময়নাদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
আবু আজাদ/এনডিএস/জেআইএম