ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

জঙ্গিবিরোধী সচেতনতায় ডিএমপির সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৩৭ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ থেকে জঙ্গিবিরোধী গণসংযোগ সপ্তাহ শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ গণসংযোগ সপ্তাহ চলবে আগামী ৪ মে পর্যন্ত। গণসংযোগ সপ্তাহ সফল করতে ডিএমপির ৫০টি থানায় সংশ্লিষ্ট বিট অফিসার ও এলাকাবাসীকে নিয়ে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে পাড়া-মহল্লার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উক্ত সভার আয়োজন করা হবে। সভায় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলে পুলিশের পদক্ষেপ ও জনগণের করণীয় বিষয়ের ওপর আলোচনা চলবে।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং বাংলাদেশে ইতঃপূর্বে সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনার পেছনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অনুসঙ্গ রয়েছে যার ব্যাপ্তি ও পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এ রকম একটি সমস্যা শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নিরসন করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, সর্বসাধারণের ব্যাপক এবং সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই একটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব। এ লক্ষ্যে ডিএমপিতে ৩০২টি বিটকে সক্রিয় রেখে ও ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য এ গণসংযোগ চলবে। উগ্রবাদ প্রতিরোধে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম, এনজিও ও সিভিল সোসাইটির সদস্যগণসহ কমিউনিটির প্রত্যেকের কার্যকর ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে।

নগরবাসীর কর্তব্য
১. পরিবার থেকে সন্তানদের নৈতিকতা, মানবিকতা, সহনশীলতা ও সহাবস্থানের চর্চা শেখানো,
২. দেশপ্রেম, বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তরুণদের উদ্বুদ্ধ করা;
৩. সকল মাধ্যমের শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা, ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করা,
৪. খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও উগ্রবাদবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা;
৫. পাড়া-মহল্লায় ক্লাব, পাঠাগার, ক্রীড়ানুষ্ঠান ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমের সুবিধা নিশ্চিত করা;
৬. প্রাপ্তবয়স্ক না হলে সন্তানদের ব্যক্তিগতভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা;
৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের আচরণগত পরিবর্তনের প্রতি লক্ষ্য রাখা ও অভিভাবকের সঙ্গে মতবিনিময়;
৮. পরিবারের সদস্য বিশেষ করে সন্তানের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করা, ছোটবেলা থেকেই ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা ও ধর্মের ইতিবাচক দিক তুলে ধরা;
৯. মিডিয়াতে ব্যাপক হারে উগ্রবাদবিরোধী প্রচারণা চালানো এবং টিভি চ্যানেলসমূহে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচার;
১০. ইমাম ও খতিবদের উগ্রবাদের বিপক্ষে বক্তব্য প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ;
১১. আন্তঃধর্মীয় মানুষের পারস্পরিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়;

পরিবারের প্রতি ডিএমপির অনুরোধ
নিজ পরিবারের কোনো সদস্যের বা সন্তানের বিশেষ কোনো পরিবর্তন ঘটছে কি না খেয়াল রাখার অনুরোধ করেছে ডিএমপি। উগ্রবাদ ও সহিংস গোষ্ঠীর প্রতি সহমর্মিতা ও সহানুভূতি প্রদর্শন, ধর্মগ্রন্থের ‘আক্ষরিক’ ও উগ্র ব্যাখ্যা গ্রহণে আগ্রহ, ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ, পুরনো বন্ধুদের এড়িয়ে চলা, পারিবারিক ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠান বর্জন, বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকা, বাঙালি সংস্কৃতিকে ইসলামের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো, সরকারি অনুদানে তৈরি মসজিদে নামাজ না পড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনিয়মিত হওয়া, অনুপস্থিতির হার বৃদ্ধি ও ক্লাসে অমনোযোগিতা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ধর্মীয় আচারের বিষয়ে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করা, কথায় কথায় ভিন্নমতাদর্শীদের কাফের, মুর্তাদ, তাগুত বলে অভিহিত করছে কি না তা খেয়াল রাখা।

বাসাবাড়ির মালিকদের ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে সজাগ থাকার অনুরোধ
বাসার কোনো ভাড়াটিয়া সবসময় দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখছে কি না, প্রতিবেশীর সঙ্গে মেলামেশা করছে কি না, বাসায় স্বল্প ফার্নিচার রাখছে কি না, টেলিভিশনসহ বিনোদনের কোনো মাধ্যম বাসায় রাখে কি না, কাজের লোক ব্যবহার করে কি না, পার্শ্ববর্তী দোকানে না গিয়ে দূরবর্তী দোকানে বাজার সওদা করে কি না, বাসা থেকে বাহির হওয়া বা প্রবেশ করার জন্য স্বাভাবিক সময় ব্যবহার করে কি না, দূরের মসজিদে নামাজ পড়ছে কি না- কোনো ভাড়াটিয়ার মধ্যে এ ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করলে নিকটস্থ পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করেছে ডিএমপি।

জেইউ/বিএ/জেআইএম

আরও পড়ুন