বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের কাছে ধারাবাহিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ
বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের কাছে ধারাবাহিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরের পররাষ্ট্র সচিব পদমর্যাদার পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি সাইমন ম্যাকডোনাল্ড।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন সম্পর্ককে ভালো করে দেখা। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বর্তমান যে সম্পর্ক রয়েছে তাই বলবৎ থাকবে। তৃতীয় কৌলশগত সংলাপ যেটি অনুষ্ঠিত হয়েছে তার ৫০ শতাংশও যদি বাস্তবায়ন হয়, তবে আমরা আসলেই বলতে পারব বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য কৌশলগত অংশীদার। আগামী দুই বছরে এ সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারে পরিণত করে আমরা এর সাফল্য উৎযাপন করব।
বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ‘যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরিত্যাগের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বিআইআইএসএস।
মেজর জেনারেল এ কে আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ অন্যান্যরা অংশ নেন।
যুক্তরাজ্যের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি সাইমন ম্যাকডোনাল্ড বলেন, এখন আমরা বিশ্বের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটি কী হবে তা বিশ্লেষণ করছি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের জন্য একটি প্রধান অংশীদার। বিশেষ করে জনসংখ্যার দিকে থেকে বাংলাদেশ প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে একটি। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যার অর্থনীতি খুবই উন্নত ও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ফলে ঐতিহাসিক কারণের পাশাপাশি বাংলাদেশ বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাজ্যের আগ্রহের বিষয়।
সেমিনারে বর্তমান বিশ্বে কূটনীতির চ্যালেঞ্জ, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং বেক্সিট নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি সাইমন ম্যাকডোনাল্ড বলেন, বর্তমান কূটনৈতিকের কাজ হলো পরিবর্তনগুলোকে লক্ষ্য করা। মানুষ বর্তমানে মনে করে কূটনীতি হলো তথ্য রাখা। তবে আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই তথ্য রাখাই কূটনীতি নয়। কূটনীতি এর থেকে বেশি কিছু। এর জন্য জরুরি হচ্ছে তথ্যের বিশ্লেষণ এবং তথ্যের উপলব্ধি।
সাইমন ম্যাকডোনাল্ড বলেন, এছাড়াও বাংলাদেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী যুক্তরাজ্যে বেশ আগে থেকেই বসবাস করছেন। যার পরিমাণ ৬ লাখের বেশি হবে। ফলে বাংলাদেশের সম্পর্কে আমাদের ভালো বোঝাপড়া রয়েছে। সেই সঙ্গে একে অপরের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও রয়েছে।
ব্রেক্সিট নিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, যুক্তরাজ্যের এ বিষয়টি সকল রাজনীতিকে ছাপিয়ে গেছে। এটি বাস্তবায়নে আমাদের সময় শেষ হয়ে গেলেও এখনও আমরা কোনো উপসংহারে আসতে পারিনি। যা পরবর্তী সংসদীয় অধিবেশনে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। আর এর মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় আইন পাস করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসতে পারি ৩১ অক্টোবরের মধ্যে। আর বর্তমানে যা হচ্ছে তা হলো ব্রিটিশ সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার একটি শক্তিশালী অবস্থানের প্রমাণ।
সেমিনারের শুরুতে মেজর জেনারেল এ কে আবদুর রহমান বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দীর্ঘ দিনের বিদ্যমান সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত উন্নয়ন অংশীদার ও বিনিয়োগকারী দেশ।
জেপি/বিএ