ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

হয়রানি থেকে যাত্রীদের মুক্তি দিতে কমলাপুরে কুলি চার্জ নির্ধারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:২১ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৯

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোনো ট্রেন যখন কমলাপুর রেল স্টেশনে এসে পৌঁছায় ঠিক তখনই শুরু হয় কুলিদের দৌরাত্ম্য। ব্যাগ, লাগেজ, মালামাল নিয়ে টানাটানি। এখানেই শেষ না, সামান্য দূরত্বে পৌঁছে দিয়েই দাবি করেন অতিরিক্ত টাকা।

যদিও কেউ কেউ আগেই মজুরি নির্ধারণ করেন, কিন্তু সামান্য দূরত্বেই অর্থাৎ প্ল্যাটফর্ম থেকে স্টেশনের বাইর পর্যন্ত ব্যাগ নিয়ে যেতে তারা ১০০-১৫০ টাকা চেয়ে বসেন। তাদের মধ্যে সিন্ডিকেট থাকায় একজন যদি এক রকম মজুরি চেয়ে বসে তাহলে অন্যরাও সেই মজুরি থেকে কমাতে চান না। ফলে যাত্রীরা পড়েন ভোগান্তিতে, যে কারণে বেশিরভাগ সময় বাধ্য হয়েই তাদের নির্ধারিত মজুরিতেই মালামাল বহন করতে বাধ্য হন যাত্রীরা।

যাত্রীদের এমন সব ভোগান্তি-হয়রানির কথা মাথায় রেখে কেজি বা ব্যাগপ্রতি কুলিদের চার্জ নির্ধারণ করে দিয়েছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, কুলিদের এমন আচরণে সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে কুলিদের চার্জ নির্ধারণ করে দিয়েছি। সম্প্রতি প্রতি প্ল্যাটফর্মসহ অন্য স্থানেও এসব পোস্টার-চার্ট টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।

koli

মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনের যাত্রী হাবিবুর রহমান বলেন, ব্যবসায়িক কাজে প্রায়ই ঢাকা আসতে হয়। প্রায় সময় সঙ্গে মালামাল থাকে। এই সুযোগে কমলাপুর স্টেশনে কুলিরা ছেঁকে ধরে। যথপোযুক্ত চার্জের চেয়ে তারা অতিরিক্ত চার্জ চেয়ে বসেন। তাদের সিন্ডিকেটের কারণে একজন একটি চার্জ বলে দিলে অন্যরা আর কমে যেতে চায় না। বাধ্য হয়ে যাত্রীরা বেশি চার্জেই যেতে বাধ্য হন।

তিনি আর বলেন, এমন নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় তাদের কারণে। কিন্তু কমলাপুর স্টেশন কর্তৃপক্ষ এখন তাদের চার্জের তালিকাসহ পোস্টার টাঙিয়ে দিয়েছে। এতে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের মালামাল কুলিকে দিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। এমনও ঘটনা আছে যে, দরদাম না করে ব্যাগ কুলিকে দিয়েছে কুলি তা নির্দিষ্ট দূরত্বে পৌঁছে দিয়ে ২০০ টাকা দাবি করে। ঝগড়া বা অপমানিত না হতে সে যাত্রী বাধ্য হয়ে ১৫০ বা ১৮০ টাকা দিয়ে যেতে বাধ্য হন।

koli

এদিকে কমলাপুরে কুলিদের চার্জ নির্ধারণ করে দেয়া পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে স্টেশনে লাগেজ বহনকারী কুলিদের আইডি কার্ড, পোশাকের মাধ্যমে কুলি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নসহ মালামাল বহনে ট্রলি, প্রতিবন্ধী-অসুস্থ, বয়স্ক রোগীদের জন্য হুইল চেয়ার সরবরাহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চার্জ সংশ্লিষ্ট তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮ কেজির একটি ব্যাগ ১৫ টাকা, দুটি ব্যাগ ২০ টাকা, ৩৭ কেজির দুটি ব্যাগ ২৫ টাকা, ৫৬ কেজি পর্যন্ত ব্যাগ ৩৫ টাকা। ট্রলি যাত্রীদ্বারা ব্যবহৃত ১৫ টাকা, কুলিদ্বারা ব্যবহৃত ২০ টাকা, হুইল চেয়ার কুলিদ্বারা ব্যবহারে ২০ টাকা। এমন চার্জে যেতে রাজি না হলে কুলিদের আইডি নম্বরসহ স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে।

এমন পদক্ষেপে সাধারণ যাত্রীরা খুশি হলেও খুশি নন স্টেশনের কুলিরা। এ বিষয়ে স্টেশনের কুলি মুহাম্মদ ফারুক বলেন, কমলাপুর স্টেশনে আমরা ২৭৩ জন নিবন্ধিত কুলি। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এ পেশায় জড়িত। এখানের উপার্জনের ওপর নির্ভর করে আমাদের সংসার চলে। স্টেশন কর্তৃপক্ষ যে চার্জ নির্ধারণ করে দিয়েছে, এটা একেবারেই কম। এত কম হলে সংসার কীভাবে চালাব? এছাড়া সব সময়ই আমরা খুব বেশি কাজ পাই না। আম, কাঁঠালের সময় মালামাল বেশি পেলেও বছরের অন্য সময় খুব বেশি কাজ পাই না। তার মধ্যেও যদি কুলির চার্জ কমিয়ে দেয়া হয়, তাহলে আমাদের সংসার চলবে কীভাবে?

এএস/জেএইচ/এমএস

আরও পড়ুন