ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানস্থলের নিরাপত্তা জোরদার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৩:১৯ পিএম, ০৯ এপ্রিল ২০১৯

দরজায় কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ। আর মাত্র পাঁচদিন পর রাজধানীসহ সারাদেশের লাখ লাখ নারী, পুরুষ ও শিশু বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি বরণ করে নিতে উৎসবে মেতে উঠবে। দিবসটি উপলক্ষে ছায়ানটসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রাজধানীসহ সারাদেশে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

বৈশাখের প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল নামবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে মঙ্গলশোভাযাত্রা বের হবে। ওইদিন লাখো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিসিটিভি স্থাপনের কাজ শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এর মাধ্যমে ওইদিন মানুষের গতিবিধি মনিটর করা হবে।

শুধু সিসিটিভিই নয়, পুলিশ, ডিবি ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদারে নিয়োজিত থাকবেন।

আজ (মঙ্গলবার) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের অদূরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশদ্বারের সামনে দেখা গেছে পুলিশের একাধিক সদস্য সিসিটিভি স্থাপনে ক্যাবল স্থাপনের কাজে ব্যস্ত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, পহেলা বৈশাখের কাকডাকা ভোর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল নামে। বিশেষ করে রমনার বটমূল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভিড় বেশি হয়। এ দুটি উদ্যানের বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে একাধিক সিসিটিভি স্থাপিত হচ্ছে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে বৈশাখ উপলক্ষে রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেল থেকে শুরু করে ছোটখাটো হোটেল, রেস্তোরাঁ, বৃহৎ শপিংমলের রেস্তোরাঁয় বৈশাখী অফার চলছে।

Boishak-Nirapotta

বাংলা নববর্ষের দিন জানমালের নিরাপত্তায় সরকার যেসব উদ্যাগ নিয়েছে সেগুলো হচ্ছে— রমনার বটমূল এলাকা, মঙ্গল শোভাযাত্রা, কূটনৈতিক এলাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট, টিএসসি এলাকাসহ দেশব্যাপী বর্ষবরণের অনুষ্ঠানগুলোয় ব্যাপক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

এছাড়া বর্ষবরণ এলাকাগুলোতে সুপেয় পানি সরবরাহ করা, গাড়ি পার্কিং, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ও ময়লা-আবর্জনা ফেলতে ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন রাখা হবে। তাৎক্ষণিক কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে প্রস্তুত থাকবে অ্যাম্বুলেন্স। ইভটিজিং বন্ধে থাকবে সাদা পোশাকধারী পুলিশ। সেই সঙ্গে পুলিশ ও র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হবে।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানগুলোয় ঢাকায় বসবাসকারী বিদেশিদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ কূটনৈতিক এলাকাগুলোর প্রতি বিশেষ নজরদারি থাকবে। জেলখানাগুলোয় থাকবে উন্নতমানের বাংলা ঐতিহ্যবাহী খাবার। কয়েদিদের অংশগ্রহণে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রমনা পার্ক ও ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরের আশপাশের লেকগুলোতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল মোতায়েন রাখা হবে।

অগ্নিনির্বাপণের কাজে নিয়োজিত থাকবেন ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা। রাজধানীর অনুষ্ঠানস্থলগুলোয় বিশেষ করে রবীন্দ্র সরোবর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি, চারুকলা ইনস্টিটিউট এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা হবে। থাকবে মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থা। রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ পথে থাকবে একাধিক গেট। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার প্রধান বা তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি চূড়ান্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলা নতুন বর্ষবরণ উপলক্ষে দেশের জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকায় অনুষ্ঠিতব্য বৈশাখী মেলা, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক উৎসবসহ নানা ধরনের প্রদর্শনীতে সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন বিভাগীয় কমিশনার, দেশের সব মেট্রোপলিটন পুলিশ, সব বিভাগের পুলিশের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা।

সূত্র জানায়, ১১ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য সেপ সাউথ এশিয়া-২০১৮ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে ১২০ জন বিদেশি ঢাকায় অবস্থান করবেন। তারা সবাই মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। তাদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে বলে নিশ্চিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুরো এলাকা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) আওতায় থকবে। রমনা বটমূলের আশপাশে মেডিকেল টিম নিয়োজিত থাকবে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘যদিও কোনো ধরনের নাশকতার হুমকি নেই বা আশঙ্কাও করছি না, তবুও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আনন্দময় করতে নগরবাসীসহ দেশব্যাপী নাগরিকদের নিরাপত্তায় পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি ও সংস্থা এ লক্ষ্যে কাজ করছে। সরকার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাজধানীসহ দেশব্যাপী পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’

এমইউ/এসএইচএস/পিআর

আরও পড়ুন