বর্জ্য অপসারণে হিমশিম খাচ্ছে ডিএনসিসি
হাজারো সমস্যায় জর্জরিত রাজধানী ঢাকা। প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস এই শহরে। রাজধানীতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সমস্যার পরিধি। এখানে নিত্যদিনের বড় এক সমস্যার নাম বর্জ্য। বাসাবাড়ির ময়লাসহ রাজধানীতে প্রতিদিন উৎপন্ন হয় ব্যাপক পরিমাণে বর্জ্য। এসব বর্জ্য অপসারণে রাজধানীর দুই সিটিতে নেই পর্যাপ্ত জনবল।
ফলে নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণের কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে দুই সিটি কর্পোরেশন। পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নকর্মী না থাকার ফলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) বর্জ্য অপসারণ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিদিন ২৩০০-২৬০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহন করে ল্যান্ডফিলে নেয়া হয়। তবে ফলের মৌসুমে তা বেড়ে ৩০০০-৩২০০ টনে গিয়ে দাঁড়ায়। দু'বছর আগে ডিএনসিসি প্রতিটি সড়কের ওপর কন্টেইনার রেখে বর্জ্য সংগ্রহ করত। তবে বর্তমানে ৫২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য মতে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যান-যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে পে-লোডার ২টি, ব্যাকহো লোডার ১টি, চেইন ডোজার ৮টি, হুইল ডোজার ২টি, রোড সুইপার ১টি এক্সকাভেটর, ৬টি, কন্টেইনার ক্যারিয়ার ৩৮টি, আর্মারোল কন্টেইনার ক্যারিয়ার ৮টি, হাতগাড়ি ২৫০০টি, ডাম্প ট্রাক ১৫টি, খোলা ট্রাক ২৪টি, জেট অ্যান্ড সাকার ২টি এবং কম্পেক্টর ২৩টি।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির সদ্যবিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম বলেন, ‘ডিএনসিসির আগের ৮২.৬৩ বর্গ কিলোমিটার অধিক্ষেত্রের সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে পার্শ্ববর্তী ৮টি ইউনিয়নের আরও ১১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা। ফলে নতুন আয়তন দাঁড়িয়েছে ১৯৬.২৩ বর্গ কিলোমিটারে। বিদ্যমান ৩৬ ওয়ার্ড এবং ৫টি জোনকে সম্প্রসারিত করে করা হয়েছে ৫৪টি ওয়ার্ড এবং ১০টি জোন।’
আসন্ন ফলের মৌসুমে ঢাকা শহরে বর্জ্য অপসারণ একটি চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নবসংযোজিত এলাকা নিয়ে এ বিশাল অঞ্চলের বাসিন্দাদের সব রকমের নাগরিক সুবিধা প্রদান করা এক বড় চ্যালেঞ্জ। প্রয়োজনের তুলনায় কম জনবল (৪৮ শতাংশ), যানবাহন ও যন্ত্রপাতির তীব্র সঙ্কট রয়েছে। তবে এ সংকট সমাধানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারব।’
সিটি কর্পোরেশনের সব বর্জ্য রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে অপসারণ এবং ঢাকনা ছাড়া ট্রাক বা ভ্যান দিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আদেশে রয়েছে হাইকোর্টের। কিন্তু নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজধানীর অনেক এলাকাতে দিনেই বর্জ্য অপসরণের কাজ চলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে নগরবাসীর।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে কর্পোরেশনের বর্জ্য অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, পরিচ্ছন্নকর্মীরা এসব বর্জ্য অপসারণের জন্য রাত থেকেই কাজে নেমে যান। রাজধানীতে বাসাবাড়ির এসব ময়লার পরিমাণ অনেক বেশি। তাই সব পরিষ্কার করতে কিছুটা সময় বেশি লেগে যায়। যদিও আমাদের পরিচ্ছন্নকর্মীরা সকালের মধ্যেই প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করে ফেলেন। বাকি ১০ শতাংশ হয়তবা দিনের বেলায় করা হয়।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যা জনবল আছে তা দিয়ে আমরা সঠিক সময়ে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ করতে চেষ্টা করছি।’
এএস/এসআর/এমএস