বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের ভিত্তি ‘দৃষ্টান্তমূলক’ : জাতিসংঘ
বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের ভিত্তিকে ‘দৃষ্টান্তমূলক’ আখ্যা দিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (আঙ্কটাড) এক বিশ্নেষণী প্রতিবেদনে এ সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নামের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে সরকারি-বেসরকারি সংলাপ পরিচালনা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার যে ভূমিকা নিয়েছে তা ‘দৃষ্টান্তমূলক’। বাংলাদেশ এমন ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণ করতে পেরেছে, যার সাহায্যে ভবিষ্যতে চাইলে তারা অনলাইন বাণিজ্যকে একটি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে দাঁড় করাতে পারবে।
বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সম্প্রতি বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের ভিত্তি পর্যালোচনা করে এই প্রতিবেদন দিয়েছে আঙ্কটাড। গত ১ এপ্রিল সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আঙ্কটাড-এর ই-বাণিজ্য সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের সামনে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
এবার পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত ই-বাণিজ্য সপ্তাহে বাংলাদেশের অগ্রগতি বিষয়ক প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সংস্থাটি ১৭টি উন্নয়নশীল দেশের ওপর মূল্যায়ন উপস্থাপন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে: আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, লাও পিপল’স ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, মিয়ানমার, নেপাল, সামোয়া, সেনেগাল, সলোমন আইল্যান্ডস, টোগো, উগান্ডা, ভানুয়াতু ও জাম্বিয়া। ই-বাণিজ্যে ভূমিকা পালনকারী উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক ব্যক্তিদের নিয়ে ১ এপ্রিল থেকে এবারের সম্মেলন শুরু হয়েছে। আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত তা চলবে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের আইসিটি খাতে বছরে গড়ে ৪০ শতাংশ সমৃদ্ধি হয়েছে। এটা উল্লেখযোগ্য অর্জন। ১৬ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশের ১১ কোটিই তরুণ, যাদের চাকরি ও ভবিষ্যৎ দক্ষতা তৈরি করা প্রয়োজন। তাদের জন্য প্রযুক্তি খাত জরুরি। এ ছাড়া দেশটির ৬৫ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে। তাই এখানে কানেকটিভিটির বিষয়টিও অগ্রাধিকার ইস্যু হয়ে আছে। তাই সমন্বিত জাতীয় কৌশলের অংশ হিসেবে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে ই-কমার্সের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়বে। নগর ও গ্রাম এলাকার মধ্যে ডিজিটাল ব্যবধান মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
২০১৬ সাল থেকে আঙ্কটাড র্যাপিড ই ট্রেড রেডিনেস নামের কর্মসূচির আওতায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ই-কমার্সের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। এ বছর বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে ই-কমার্সের সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দিয়েছে তারা। গত সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আঙ্কটাডের ই-কমার্স সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের সামনে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান শাসকজোটের শীর্ষ দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঘোষিত ‘রূপকল্প ২০২১’-এ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করা হয়। দেশকে কেবল আধুনিক, জ্ঞানভিত্তিক সমাজে পরিণত করা নয়, জিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের লক্ষ্য বরং ২০২১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিকে বিশ্বের নতুন একটি আইসিটি গন্তব্যে পরিণত করা।
জেডএ/জেআইএম