‘কর্পোরেট’ হাসপাতালগুলোর মানবিক দৃষ্টান্ত
পাঁচতারকা হোটেল খ্যাত বিভিন্ন কর্পোরেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সুচিকিৎসার নামে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ বিভিন্ন অজুহাতে রোগীদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে আহতদের চিকিৎসায় মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এসব প্রাইভেট হাসপাতাল।
এ অগ্নিকাণ্ডে আহতরা রাজধানীর অ্যাপোলো, ইউনাইটেড, শাহাবুদ্দিন ও লালমাটিয়া বিডি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছেন। সামাজিক দায়িত্ববোধ ও মানবিক মূল্যবোধ থেকে তারা রোগীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থ নিচ্ছেন না। বর্তমানে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ১৫ জন, অ্যাপোলো হাসপাতালে ছয়জন, শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচজন, লালমাটিয়া বিডি হাসপাতালে একজনসহ মোট ২৭ জন চিকিৎসাধীন।
অগ্নিকাণ্ডের পর প্রাণ বাঁচাতে বহুতল ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে, হুড়োহুড়ি করে ভবন থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে, আগুনের ধোঁয়ায় কণ্ঠনালি পুড়ে গিয়ে তারা আহত হন।
গতকাল বৃহস্পতিবার আরও বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তি এসব হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ আজ শুক্রবার দুপুরে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানের প্রশংসা করে বলেন, গতকাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আহতদের চিকিৎসা প্রদানের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। টাকার জন্য কোনো হাসপাতাল যেন রোগী ফিরিয়ে না দেয়, সে আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল আহতদের ভর্তি শুধু রাখেনি, তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করছে। তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে সরেজমিন রোগীদের সঙ্গে আলাপ করেছেন। তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসকরা ছিলেন খুবই আন্তরিক। তিনি কয়েকটি প্রাইভেট হাসপাতালের মালিককে আশ্বস্ত করেছিলেন আহতদের চিকিৎসার ব্যয় সরকারিভাবে পরিশোধ করা হবে। কিন্তু তারা বিনয়ের সঙ্গে জানিয়েছেন, সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে এবং মানবিক মূল্যবোধ থেকে তারা আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসা করাবেন।
অধ্যাপক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ জানান, শুধু প্রাইভেট হাসপাতাল নয় রাজধানীর বিভিন্ন প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসও বিনামূল্যে রোগী পরিবহন করেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কথা অনুসারে গতকাল বনানীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১২০ জন আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ অগ্নিকাণ্ডে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হলেও পুলিশের হিসাবে মৃতের সংখ্যা ২৫।
এমইউ/জেডএ/পিআর