কালেভদ্রে মানুষের দেখা মেলে যে ফুটওভার ব্রিজে
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসের কবি সুফিয়া কামাল হলের মাঝামাঝি স্থানে একটি নান্দনিক ফুটওভার ব্রিজ নির্মিত হলেও এর যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ফুটওভার ব্রিজে কালেভদ্রে মানুষের দেখা মিলে।
গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ব্যস্ততম এই সড়কটিতে পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লোহার গ্রিলের ফাঁক গলিয়ে পারাপার হলেও সুন্দর ফুটওভার ব্রিজটিতে উঠছেন না। এর দুই পাশের সিঁড়িতে ওঠার আগে সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ’। কিন্তু দ্রুত রাস্তা পার হতে ফুটওভার ব্রিজে উঠে ‘সময় নষ্ট’ করতে রাজি নয় কেউ। সবার মধ্যেই দ্রুত রাস্তা পারাপারের এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে।
ঘণ্টাখানেক পর দুই তরুণ-তরুণীকে ফুটওভার ব্রিজে উঠে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে দেখা যায়। ফটো সেশন শেষে নিচে নামার পর এ প্রতিবেদক তাদের কাছে ফুটওভার ব্রিজটি নিয়মিত ব্যবহার করেন কিনা জানতে চাইলে ঢাবি গণিত বিভাগের ওই দুই শিক্ষার্থী জানান, এ পথ দিয়ে হেঁটে সচরাচর চলাচল করা হয় না। এদিন ক্লাস শেষ করে হেঁটে বঙ্গবাজারে যাচ্ছিলেন, ফুটওভার ব্রিজে সাজানো ফুলের টব দেখে ছবি তুলতে উপরে ওঠেন। তারা বলেন, এতো সুন্দর ফুটওভার ব্রিজটি অনেক বেশি ব্যবহার হওয়া উচিত।
এ প্রতিবেদককে অনেকক্ষণ ওই স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কবি সুফিয়া কামাল হলের নিরাপত্তা রক্ষী এর কারণ জানতে চান। গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় দিয়ে হলের ছাত্রীরা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করেন কি না -জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই চায় দ্রুত রাস্তা পার হতে। এ কারণে খুব কম সংখ্যক ছাত্রী ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করেন। রাস্তা পার হতে গিয়ে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মানুষ মারা গেলে তবেই টনক নড়বে, ফুটওভার ব্রিজটির ব্যবহার বাড়বে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আব্দুল গনি রোডে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট বলেন, আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে এখনও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। তারা হাত উঁচু করে যানবাহন থামিয়ে রাস্তা পারাপারে অভ্যস্ত। কিন্তু তারা একটিবারও চিন্তা করে না দ্রুতগামী যানবাহনের চালক ইচ্ছে করলেই হার্ড ব্রেক করতে পারে না। ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে কঠোর আইন প্রণয়ন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এমইউ/এমএমজেড/আরএস/এমকেএইচ