সামান্য ফাঁক গলিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার
ঢাকার রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড। ঢাকা-চট্টগ্রামের ব্যস্ততম মহাসড়ক এটি। নির্বিঘ্নে রাস্তা পারাপারে এখানে রয়েছে একটি ফুটওভার ব্রিজ। কিন্তু কেউ সেটি ব্যবহার করেন না। ব্যবহারেরও আগ্রহ নেই কারও!
ফুটওভার ব্রিজটির ঠিক নিচে সামান্য ফাঁক জায়গা। সেটি দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন অনেকে।
সোমবার সকালে ঘণ্টাখানেক ওই ফুটওভার ব্রিজে অবস্থান করে এমন চিত্র দেখা মেলে। ব্রিজের মাঝখানের পিলার ও রোড ডিভাইডারের মধ্যে সামান্য ফাঁক জায়গা। লোকজন ওই ফাঁক দিয়ে বিশেষ কসরত করে এপাশ থেকে ওপাশে যাচ্ছেন। কেউ শিশুদের নিয়েও পার হচ্ছেন।
ব্যস্ত এ মহাসড়ক দিয়ে সাঁই সাঁই করে গাড়ি ছুঁটছে, এরই মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে বড় একটি ট্রলি ব্যাগসহ এক ব্যক্তি সড়কের দক্ষিণ পাশ থেকে ছুটে এসে মাঝখানে ডিভাইডার ঘেঁষে দাঁড়ান। তারপর ট্রলিটা ডিভাইডারের ওপর রেখে শরীর বাঁকিয়ে ছোট ফাঁক দিয়ে ওপাশে বেরিয়ে আবারও ছুট দেন। লোকটির পেছন পেছন আরও কয়েকজনকে এসে সেখানে দাঁড়াতে দেখা যায়।
একপর্যায়ে রাস্তার ওই স্থানে ছোটখাটো জটলা তৈরি হলে চলাচলকারী গাড়িগুলোর গতিও কমে যায়।
ট্রলি নিয়ে এভাবে রাস্তা পার হওয়া ব্যক্তির নাম মো. হাফিজুর রহমান। ফুটওভার ব্রিজ থাকার পরও এভাবে রাস্তা পার হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত ভারি ট্রলি নিয়ে কীভাবে ওভারব্রিজে উঠব? কষ্ট হবে, তাই একটু ঝুঁকি নিয়ে হলেও পার হলাম। এছাড়া আমরা একটু তাড়াও আছে।’
একটু পর একই ভাবে ৫/৬ বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে রাস্তা পার হন এক ব্যক্তি। ওভার পাস ব্যবহার না করে কয়েকজন নারীও ওই স্থান দিয়ে পার হন।
সেখানে দায়িত্বপালনকারী ট্রাফিক পুলিশের এক কনস্টেবল জানান, ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা সপ্তাহ’ চলার সময় মানুষ যাতে রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করে সেজন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কাউকে নিচ দিয়ে রাস্তা পার হতে দেয়া হয়নি। ওভার পাসের নিচে যে ফোঁকড় রয়েছে সেটি বাঁশ দিয়ে বন্ধও করে দেয়া হয়েছিল। দেখুন, বাঁশটি এখনও আছে। কিন্তু মানুষ সেটি সরিয়ে চলাচল করছে।
‘আমরা মানুষকে কত আটকাব, অত লোকবলও বা কই? মানুষ সচেতন না হলে এ সমস্যার সমাধান হবে না।’
ব্যস্ততম এ সড়কে কেউ কেউ আবার বুক সমান উঁচু রোড ডিভাইডারও পার হয়ে যান জীবনের তোয়াক্কা না করে। তা দেখে আক্ষেপের সঙ্গে ওই কনস্টেবল বলেন, ‘কে শোনে কার কথা? জীবনের চেয়ে সময়ের মূল্য যে বেশি!’
আরএমএম/এমএআর/আরএস/জেআইএম