ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আর্জেন্টিনায় দূতাবাস খোলার বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় আছে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ২৪ মার্চ ২০১৯

আর্জেটিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে বাংলাদেশের দূতাবাস খোলার বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। গতকাল বুয়েন্স আয়ার্সের ক্যাস্টেলার হোটেলে ‘আর্জেন্টিনা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এবিসিসিআই) আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বাংলা, স্প্যানিশ ও ইংরেজি ভাষার মেলবন্ধনে বহুজাতিক ও বহুভাষিক সংস্কৃতির আবহে এবিসিসিআই আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পরিণত হয় সেখানে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালি ও আর্জেন্টিনাবাসীর এক মিলন মেলায়। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্গারেট পিকোরা।

এ সময় আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত প্রায় শতাধিক প্রবাসী বাঙালি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আর্জেন্টিনায় পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস খোলার আহ্বান জানান।

Momen

জবাবে মন্ত্রী বলেন, বুয়েন্স আয়ার্সে দূতাবাস খোলার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। তাছাড়া এখানে একজন অনারারি কনসাল নিয়োগের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন আছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কথা উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি ও আর্জেন্টিনাবাসীদের সামনে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তার বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশের বিস্ময়কর আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, জিডিপির অব্যাহত প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ, সবধরনের অবকাঠামোগত সুবিধা সম্বলিত একশটি বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল গঠন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির পর্যাপ্ততা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ওয়ান স্টপ সার্ভিস, দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের সম্পৃক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে টাস্ক ফোর্স গঠন, প্রবাসী দিবস পালনসহ প্রবাসীদের কল্যাণে গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা।

বাংলাদেশের সাশ্রয়ী শ্রম বাজার, দ্রুত সময়ে দক্ষতা অর্জনে সক্ষম জনশক্তি, সাশ্রয়ী জ্বালানি খরচ, বিনিয়োগকৃত মূলধন প্রত্যাবাসনের সুযোগ এবং বিনিয়োগের উচ্চ লাভের কথাও তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে এসে এসব উন্নয়ন বাস্তবতা নিজ চোখে দেখার জন্য তিনি উপস্থিত আর্জেন্টিনার নাগরিক ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।

Momen

নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ৩৮ বছর প্রবাসে থেকেছি। আমি আপনাদেরই প্রতিনিধি। একজন প্রবাসীকে প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রীসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রবাসীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসার এর থেকে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে?’

নিজেদের অর্জিত অভিজ্ঞতা, শিক্ষা ও জ্ঞান ব্যবহার করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বুয়েন্স আয়ার্সে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক ২য় উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে (বাপা+৪০) বাংলাদেশের সফল অংশগ্রহণ এবং আর্জেন্টিনায় আগমনের ভিসা সুবিধা বৃদ্ধি করতে দেশটির সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠকের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্জেন্টিনার নাগরিকদের বাংলাদেশের বন্ধু উল্লেখ করে ‘ফ্রেন্ডস্ অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত দেশটির লেখিকা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যেভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তা স্মরণ করেন।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন অর্থনৈতিক কূটনীতি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে ডায়াসপোরা কূটনীতির বিভিন্ন ইতিবাচক দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার আওতায় আগামী দিনগুলোতে আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও ইতিবাচক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

এবিসিসিআই সভাপতি তালুকদার আলীম আল রাজী তার বক্তব্যে বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও পণ্যের প্রসারে আর্জেন্টিনায় নানা ধরনের মেলায় আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ১৩ মে তারা বুয়েন্স আয়ার্সে আন্তর্জাতিক বই মেলার আয়োজন করছেন। যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকাশনী যোগ দেবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ও প্রবাসীদেরকে বিনিয়োগে আকর্ষণ করা সংক্রান্ত দুটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুলতানা আফরোজ এবং বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসির ডেপুটি চিফ অব মিশন মাহবুব হাসান সালেহ। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাপা+৪০ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

জেপি/এমএমজেড/পিআর

আরও পড়ুন