২৭ বার মামলা, রুট পারমিট ছিল না সু-প্রভাতের
রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়কে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহাম্মেদ চৌধুরীকে চাপা দেয়ায় জড়িত ঘাতক বাসটির ছিল না রুট পারমিট। ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রুট পারমিট ছিল ওই বাসটির। এর আগে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় ও রুট পারমিট ব্যতীত চালানোয় ২৭ বার মামলাও হয়েছে বাসটির বিরুদ্ধে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে আবরারকে চাপা দেয় সু-প্রভাত নামের পরিবহনের বাসটি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত ট্রাফিক শৃঙ্খলা ও সচেতনতা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
কমিশনার প্রশ্ন রেখে বলেন, তাহলে সুপ্রভাত পরিবহনের এ বাসটি রাজধানীতে কীভাবে চলাচল করছিল?’ এই অনিয়মের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়ী করেন তিনি।
আরও পড়ুন : সু-প্রভাত হয়ে যাচ্ছে সম্রাট
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘যে জেব্রা ক্রসিং মানুষকে রাস্তা পারাপারে নিরাপদ করে সেই জেব্রা ক্রসিংয়েই প্রাণ দিতে হলো আবরারকে। সু-প্রভাত গাড়িটি এ অপরাধও করেছে।’
কমিশনার বলেন, ‘ঢাকা শহরের পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাই দায়ী। আবরারের মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এখন চূড়ান্ত সময় এসেছে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার।’
মালিক শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, টিকিট কাউন্টার করে বাস চালান, লক্কর-ঝক্কর ও মডেলবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামাবেন না। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করুন। এসব না করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনেক ছাড় দেয়া হয়েছে আর নয়।
তিনি বলেন, রাস্তার পাশে স্টপজে গাড়িগুলোকে দাঁড় করান। সেখানে আড়াআড়িভাবে দাঁড়াবেন না। এটি করলে রেকারিং করে ডাম্পিং করা হবে। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
পরিবহন শ্রমিকদের উদ্দেশে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘ডিএমপি কোনো গাড়ি রিকুইজিশন করে না। গাড়ি লাগলে টার্মিনাল থেকে নেয়া হয়। জাবালে নূরের দুটি ও সু-প্রভাতের একটি গাড়ির রুট পারমিট এবং নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। বাকি বাসগুলোর আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। বিআরটিএতে সব কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। কাগজে গড়মিল থাকলে সেগুলোরও রুট পারমিট বাতিল করা হবে। যেগুলোর কাগজপত্র ঠিক থাকবে সেসব গাড়ি অচিরেই চালুর ব্যবস্থা করা হবে।’
আরও পড়ুন : লেখাপড়া করে যে গাড়ি চাপায় মরে সে
ছাত্রদের অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সড়ক অবরোধ করে কোটি কোটি মানুষের দুর্ভোগ তৈরি করবেন না। দায়িত্বশীল আচরণ করুন। আপনারা ক্লাসে ফিরে যান। আমাদের কাজ করতে সহযোগিতা করুন। চালক ও গাড়ি আটক হয়েছে। গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেহেতু জেব্রা ক্রসিংয়ে মানুষ মেরেছে তাই চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে।’
কোনো গাড়ি আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা করলে বা রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়ালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশ দেন কমিশনার।
জেইউ/এনএফ/এসআর/জেআইএম