বাঘাইছড়ির ঘটনা ইসির ৪৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে গুলিতে ৭ জন নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ নিন্দা জানান।
মাহবুব তালুকদার বলেন, গতকাল (সোমবার) পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঘাইছড়িতে যা ঘটেছে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ৪৮ বছরের ইতিহাসে তা সবচেয়ে মর্মান্তিক ও শোকাবহ ঘটনা। এই আক্রমণ ও নিরাপরাধ মানুষ হত্যার বিষয়ে নিন্দা জানাবার ভাষা আমার জানা নেই। এমন অমানবিক বর্বরোচিত হামলায় যে সাতজন নিহত হয়েছেন, আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি, যারা আহত হয়েছেন- ঢাকা ও চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন আছেন। আমি তাদের দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থতা কামনা করি। একই সঙ্গে আমি নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা।
তিনি বলেন, আজ সকালে আমি ঢাকা সিএমএইচে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেই। সেখানে মোট সাতজন চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে তিনজনের অপারেশন হয়েছে। অন্যদেরও অপারেশন করা হবে। একজন সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) রয়েছেন। সিএমএইচের ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে ধারণা হয়েছে, আহতদের আরোগ্যের জন্য সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীও পরে সিএমএইচ পরিদর্শন করেন।
মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, সাংবাদিকরা উল্লিখিত ঘটনা সম্পর্কে আমাকে তিনটি প্রশ্ন করেছেন। প্রশ্নগুলো হলো; এ ঘটনার কারণ কী? এ ঘটনার ব্যর্থতার দায় কার? কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন? আমি মনে করি তাৎক্ষণিকভাবে এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া সমীচীন নয়। ঘটনাটি সম্পর্কে তদন্ত করে এর কারণ ও দায়দায়িত্ব নিরুপণ করা হবে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের আগে যে কোনো বক্তব্য তদন্তকাজকে ব্যাহত ও বিভ্রান্ত করতে পারে।
‘সাংবাদিকরা আরও জানতে চেয়েছেন, এ বিষয়ে কমিশন কী ব্যবস্থা নেবে? কমিশন তো অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ ঘটনা সম্পর্কে বিশদ জানতে ও আহতদের দেখতে আজ সকালে চট্টগ্রাম গেছেন। তিনি চট্টগ্রাম থেকে ফিরে এলে কমিশনের সব সদস্য আলোচনা করে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে,’- বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে নির্বাচনকর্মীদের ওপর ব্রাশফায়ার করে দুর্বৃত্তরা। এ হামলায় নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ৭ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হন। সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে দীঘিনালা-বাঘাইছড়ি সড়কের নয়মাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম কংলাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাচালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঘাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন শেষে একসঙ্গে বিজিবি প্রহরায় গাড়িবহর নিয়ে বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরে ফিরছিলেন তারা।
এইচএস/জেডএ/এমএস