ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

তাহলে আমরা মরছি কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:০৬ পিএম, ১৯ মার্চ ২০১৯

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সু-প্রভাত বাসের চাপায় বিইউপির ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহতের ঘটনায় আট দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সড়ে যেতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অনুরোধ করলেও তারা তা মানছেন না। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আন্দোলন তুলে নিতে ও নিয়মের কথা বলছেন, তাহলে আমরা মরছি কেন?’

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। এ সময় জয়েন্ট কমিশনার (ট্রফিক উত্তর) মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম ও উপ-কমিশনার (গুলশান) মোস্তাক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেন, ইন্ডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইদা মাহবুব-ই জান্নাত, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের আহমেদ মুইন নাহিদ।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আপনারা (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা) নিয়মের কথা বলছেন, আমরা রাস্তায় মরছি- এ পরিস্থিতির সমাধান কবে?

আরও পড়ুন> টনক তুমি নড়বে কবে?

জয়েন্ট কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তোমাদের মতো আমরাও ব্যথিত। তোমরা জেনেছ, ঘটনার পরই আমরা ঘাতক বাস ও চালককে আটক করেছি। তোমরা নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করছ, আমরাও এতে অনুপ্রাণিত। কারণ, আমরাও নিরাপদ সড়ক ও যানজটমুক্ত রাজধানীর জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, তোমাদের এ আন্দোলন আমাদের ওপর চাপ তৈরি করবে এবং কাজকে বেগবান করবে। তোমরা জানো, রাজধানীর ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা ছিল। আমরা সেখান থেকে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেছি। হয়তো আমরা সবকিছু শেষ করতে পারিনি কিন্তু ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা উত্তরণে বেশকিছু সফলতা পেয়েছি। রাতারাতি সব হয় না, আমাদের সময় দাও।

আরও পড়ুন> যান চলাচল বন্ধ, ভরসা কেবল পা

জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই আমরা এখানে আছি। তাদের প্রতি আমাদের বলপ্রয়োগ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ডিএনসিসি এবং পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের মোটিভেশনের চেষ্টা করছি। তবে তারা আমাদের অনুরোধ এখনও রাখেনি। তারা রাস্তা অবরোধ করে আছে, আমরাও রয়েছি।

আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা গেট এলাকায় সু-প্রভাত বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হন। তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফের বড় ছেলে। আবরার মালিবাগে নিজস্ব বাসায় থাকতেন।

আবরার আহমেদ নিহত হওয়ার ঘটনায় সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন তার সহপাঠীসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় প্রগতি সরণিতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আট দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হচ্ছে-
১. পরিবহন সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং প্রতি মাসে বাসচালকের লাইসেন্সসহ সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করতে হবে।
২. আটক চালক ও সম্পৃক্ত সবাইকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৩. আজ থেকে ফিটনেসবিহীন বাস ও লাইসেন্সবিহীন চালককে দ্রুত সময়ে অপসারণ করতে হবে।
৪. ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সব স্থানে আন্ডারপাস, স্পিড ব্রেকার এবং ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
৫. চলমান আইনের পরিবর্তন করে সড়ক হত্যার সাথে জড়িত সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৬. দায়িত্ব অবহেলাকারী প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে স্থায়ী অপসারণ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭. প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্টপ এবং যাত্রী ছাউনি করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং
৮. ছাত্রদের হাফ পাস (অর্ধেক ভাড়া) অথবা আলাদা বাস সার্ভিস চালু করতে হবে।

জেইউ/আরএস/এমএস