চারপাশ আলোকিত, এখনও অন্ধকার ওয়াহিদ ম্যানশন চত্বর
সাদা কাপড়ের ব্যানারটি বন্ধ দোকানের সাটারের ওপরে ঝুলছিল। তাতে লাল-নীল কালিতে লেখা রয়েছে স্থান পরিবর্তন। কালার ট্রেডিং, বর্তমান ঠিকানা ৪০, হায়দার বক্স লেন, চুড়িহাট্টা। মোবাইল নম্বর…….।
বৃহস্পতিবার, রাত তখন সাড়ে ৯টা। পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় বহুল আলোচিত ওয়াহিদ ম্যানশনের বিপরীত দিকের একটি দোকানে এই নোটিশটি ঝুলছিল। অদূরে চুড়িহাট্টা বড় মসজিদের ভেতর থেকে ভেসে আসছিল কোরআন শিক্ষার পাঠ।
আশেপাশের অলিগলির প্রতিটি দোকান-পাটে উচ্চ ক্ষমতার বাতি জ্বলছে। মহাজন দোকানে বসে চায়ের কাপে হিসাব কষছে কেউবা আবার চুমুক দিতে দিতে কেউবা আবার ক্রেতাদের সঙ্গে প্লাস্টিকের দানা ও রংয়ের দরদাম করছে। দিনমজুররা ব্যস্ত বস্তাভর্তি মালামাল ঠেলাগাড়িতে উঠানোর কাজে। চারদিক আলোকিত থাকলেও তিন সপ্তাহ পরও এখনও ওয়াহিদ ম্যানশন ভবন ও আশেপাশে অন্ধকারে ডুবে রয়েছে।
আজ রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, তিন সপ্তাহ ধরে অন্ধকারে ডুবে থাকলেও এখনও মানুষ সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডস্থল একনজর দেখতে ছুটে আসছেন। যারাই এ রাস্তা দিয়ে যান তারাই ক্ষণিকের জন্য থমকে দাঁড়িয়ে ওয়াহিদ ম্যানশন ও আশেপাশের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ও দোকানপাট দেখেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ খান বিজয় নামের এক যুবক জানান, একসময় চুড়িহাট্টার এ মোড়টি ছিল সবচেয়ে আলোকোজ্জ্বল ও জমজমাট। এখানকার দুটি হোটেলে অসংখ্য মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা দিতেন। কিন্তু গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতের অগ্নিকাণ্ডে ভবন দুটি বসবাসের অযোগ্য ঘোষণার পর থেকে সন্ধ্যা নামতে না নামতেই এ এলাকাটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। কবে নাগাদ এ চত্বরটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে তা জানতে ভীষণ আগ্রহী এলাকার সাধারণ মানুষ।
রুস্তম আলী নামে এক মুসল্লি বলেন, তিন সপ্তাহ কেন পুরান ঢাকার মানুষের পক্ষে কখনও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ ওইদিন ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ৭১টি তাজা প্রাণ ঝরে গেছে।
এমইউ/বিএ