অনৈতিক কিছু দাবি করলে দুদকে যোগাযোগের অনুরোধ
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কমকর্তা পরিচয়ে অনৈতিক কিছু দাবি করলে দুদকে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে দুদক।
পরিচয় নিশ্চিত হতে যে কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে তারা হলেন- পরিচালক (গোয়েন্দা) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী (মোবাইল নম্বর ০১৭১১-৬৪৪৬৭৫) অথবা উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য (মোবাইল নম্বর ০১৭১৬-৪৬৩২৭৬) ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিশনের নিজস্ব গোয়েন্দা উৎসসহ বিভিন্ন উৎস হতে কমিশন অবহিত হয়েছে যে, দুদকের কর্মকর্তা এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিচয়ে কমিশনের মামলা অথবা কমিশনের কাল্পনিক মামলা থেকে অব্যাহতি অথবা অভিযুক্ত করা হচ্ছে জানিয়ে টেলিফোনে অনৈতিক অর্থ দাবি করছে একাধিক প্রতারক বা প্রতারকচক্র।
আবার, এমনও অনেক প্রতারক রয়েছে যারা একইভাবে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন দফতর বা সংস্থায় অনৈতিক তদবির করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমিশনের কর্মকর্তাদের আত্মীয়, বন্ধু কিংবা অন্য কোনো স্বজন পরিচয়ে অনৈতিক তদবির করছে প্রতারকচক্র।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমিশন এ জাতীয় কর্মকাণ্ড বন্ধে বহুমাত্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে । কমিশনের গোয়েন্দা তৎপরতায় গত বছরের ৭ নভেম্বর দুদকের একটি বিশেষ টিম রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর রাজ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে থেকে প্রতারক ফয়সল রানা ওরফে মো. ফয়েজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়।
পরবর্তীতে ২৪ জানুয়ারি নয়াপল্টন ভিআইপি রোডের গোল্ডেন প্লেট রেস্টুরেন্ট এলাকা থেকে ভুয়া দুদক কর্মকর্তা হাসান মুন্না ওরফে রফিককে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানা মামলা করা হয়েছে।
দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-২ এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেলের (এনটিএমসি) যৌথ অভিযানে নাজমা নামে আরেক ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার প্রকুত নাম রাজু মিয়া। তাকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। রাজুর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে।
২ ফেব্রুয়ারি দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-২ এবং এনটিএমসির যৌথ অভিযানে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে সিরাজুল ইসলাম ওরফে হাজী জহিরুল হুদা ওরফে প্রশান্ত ওরফে সুশান্ত ওরফে মনিরুজ্জামান মিয়া ওরফে শহিদুল ইসলাম নামে এক ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার প্রকৃত নাম আনিসুর রহমান বাবুল। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কুমিল্লা থেকে ইয়াসিন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
প্রতারকদের আইনের আওতায় আনা একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা কমিশন নিরলসভাবে পরিচালনা করছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। কারণ দুদকের আইন অনুসারে কোনো একক ব্যক্তির অভিপ্রায় অনুযায়ী অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার যেমন কোনো সুযোগ নেই, তেমনি অভিযুক্ত হওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।
এ ছাড়া কমিশনের কর্মকর্তাদের অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত বিষয়ে শুধু পত্রের মাধ্যমেই যোগাযোগের নির্দেশনা রয়েছে, টেলিফোন বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নয়। এই প্রেক্ষাপটে যদি কোনো ব্যক্তি কমিশনের কর্মকর্তা কিংবা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙিয়ে টেলিফোন করে বা মিথ্যা পরিচয়ে কোনো বিষয়ে তদবির করে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে দুদকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এমইউ/এমএসএইচ/জেআইএম