৬৮ নয় চকবাজারে ছিল ৬৬ লাশ
পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাস্থল থেকে ৬৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ডিএনএ টেস্টের আলোকে পুলিশের এ বিভাগটি বলছে, ঘটনাস্থল থেকে ৬৮টি ব্যাগে করে মরদেহ আনা হয়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল, এগুলোর মধ্যে ৬৮টি মরদেহ রয়েছে। তবে মরদেহ পাওয়া গেছে ৬৬টি। বাকিগুলো অন্য মরদেহের খণ্ডাংশ।
সিআইডি জানিয়েছে, মরদেহের ব্যাগগুলোর মধ্যে একটিতে শরীরের তিনটি অঙ্গের খণ্ডাংশ ছিল। অপরটিতে একটি বিচ্ছিন্ন হাত ছিল। ডিএনএ টেস্টের পর সিআইডি জানতে পারে এগুলো আলাদা ব্যক্তির মরদেহ নয়, যাদের মরদেহ মর্গে রয়েছে তাদের মধ্যেই তিনজনের অঙ্গের খণ্ডাংশ।
মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে সংস্থাটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন বলেন, মর্গে ৬৮টি মরদেহের ব্যাগ পায় সিআইডি। এর মধ্যে ৪৮টি মরদেহ পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করায় তা হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ২০টি ব্যাগ থেকে ও ২৩টি পরিবারের সদস্যের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করা হয়। পরীক্ষার পর প্রথম ধাপে ১১টি মরদেহের পরিচয় মেলে। আজ আরও পাঁচটি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।
সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বাকি চারটির মধ্যে একটিতে যে হাতের বিচ্ছিন্ন অংশ ছিল সেটা ছিল ২৩ নম্বর মরদেহের, যা আগেই হস্তান্তর করা হয়।
এ ছাড়া ৬৬ নম্বর ব্যাগটিতে তিনটি অঙ্গের খণ্ডাংশ ছিল, এগুলো মরদেহ নম্বর ৮ ও ১৩ এর শরীরের অংশ। এই দুটি মরদেহও আগে হস্তান্তর করা হয়।
সিআইডির কাছে বর্তমানে রয়েছে দুটি মরদেহ ও তিনটি পরিবারের ডিএনএ নমুনা। তবে দুই মরদেহের সঙ্গে এ তিন পরিবারের কারও ডিএনএ নমুনার মিল পাওয়া যায়নি। এগুলো মর্গে থাকবে। কেউ মরদেহগুলোর দাবি করলে তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে মেলানো হবে বলে জানান শেখ হিমায়েত।
আজ শনাক্ত হওয়া পাঁচ মরদেহ হলো- হাজি ইসমাইল, ফয়সাল সারওয়ার, রেনুমা তাবাসসুম দোলা, মোস্তফা ও মো. জাফরের।
গত ৬ মার্চ শনাক্ত হওয়া ১১টি মরদেহ হলো- ফাতেমাতুজ জোহরা, সালেহ আহমেদ, মো. ইব্রাহীম, মো. এনামুল হক, তানজীল হাসান, নাসরিন জাহান, মো. শাহীন আহমেদ, হাসান উল্লাহ, দুলাল কর্মকার, নুরুজ্জামান, নুরুল হকের।
২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার ৬৪ নম্বর হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বর্তমান তথ্য অনুযায়ী ঘটনাস্থল থেকে ৬৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর আহত ও দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জন মারা যান। অর্থাৎ মোট নিহতের সংখ্যা ৭০ জন।
২২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ এলাকায় স্বজন দাবিদারদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি।
এআর/জেডএ/জেআইএম