১৪ দলকে অবহেলা করা আত্মঘাতী
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, মহাজোট ১৪ দলের ঐক্যের শক্তিতে বিজয়ী হবার পরে ঐক্যকে কার্যকর রাখতে পারেনি। পরাজিত শক্তির পুনরুত্থান বন্ধে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। ঐক্য নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই, মহাজোট ১৪ দলকে অবহেলা করা হবে আত্মঘাতী।
তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরে ছোটদের আড়ি আড়ি খেলার মত আমাদের ফরমায়েশি বিরোধী দলের স্বীকৃতি সংসদকে প্রাণবন্ত করবে না। তিনি সংসদীয় কমিটিগুলোকে শক্তিশালী এবং স্থানীয় সরকারকে প্রভাবমুক্ত করার দাবি জানান।
বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি জানান তিনি।
ইনু বলেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনকে অমীমাংসিত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তারা একাদশ সংসদ নির্বাচনকে বিতর্কিত হিসেবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু আমার প্রশ্ন বিএনপির যারা ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনকে অমীমাংসিত, রাজনৈতিক সংশয়, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তারা নতুন করে ষড়যন্ত্রের বিচ বাংলার মাটিতে বপন করতে চাইছে। যেকোনো নির্বাচনে অনিয়ম ঘটে, বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ঘটনাকে ঢালাওভাবে বড় করে দেখিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাতিল করার অপচেষ্টা অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশে নির্বাচনে ৪০ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্র ছিল, মাত্র ২৫ এর অধিক কয়েকটি কেন্দ্রে বিতর্কিত ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া কোনো কিছুই ঘটেনি। নির্বাচনে অনিয়ম আবিষ্কার করার একটা অপচেষ্টা চলছে। ঐক্যফ্রন্ট গণশুনানি করেছে, এটা গণঘুমের শুনানিতে পরিণত হয়েছে। কাল্পনিক অভিযোগের ফিরিস্থ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ যেন আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখার মত।
তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন কোনো মাপকাঠিতে মাপা যাবে। এটাকে ২০০১-২০১৮ সালের রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় এটাকে দেখতে হবে। জঙ্গি সন্ত্রাস দমনের যে যুদ্ধ, সে যুদ্ধের চশমা দিয়ে এ নির্বাচনকে দেখতে হবে। জঙ্গি দমনের ভেতর সাংবিধানিক এ প্রক্রিয়া রক্ষা করা, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সচল রাখা, অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখার মত বিষয় শেখ হাসিনাকে করতে হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনও সেই জঙ্গি দমনের যুদ্ধের ভিতরে সংঘটিত হয়েছে। নির্বাচনের আগের ৬ মাস কি ছিল- তা দেখলেই বুঝা যায় কোন পরিস্থিতিতে আমাদের এ নির্বাচন পরিচালনা করতে হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত ড. কামালরা দলছুট ব্যক্তিদের সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্ট তৈরি করা, একটির পর একটি হুমকি ধামকির ভিতর দিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে জাতি কী দেখেছে, বিএনপি চেয়েছিল শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন না। খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না। সরকারের পদত্যাগ ছাড়া নির্বাচন করবেন না, প্রতিনিয়ত একটা সংশয় সৃষ্টি করা হচ্ছিল। নির্বাাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে মানুষ ভাবতে শুরু করে দিয়েছিল বাংলাদেশে আর নির্বাচিত সরকার টিকবেই না। একটি অসাংবিধানিক সরকার আসবে। একটি ভূতের সরকার আসবে। একটা অস্বাভাবিক সরকার আসবে। এ রকম একটি পরিস্থিতিতে আমাদের নির্বাচন করতে হয়েছে।
এইচএস/জেএইচ/পিআর