উপস্থিতি বাড়লেও কেন্দ্রে নেই ভোটারের সারি
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা বাড়লেও কোনো কেন্দ্রে ভোটারের সারি দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত অংশের নবগঠিত ওয়ার্ডগুলোতে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে শনিরআখড়া, গোবিন্দপুর, মাতুয়াইলের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
তবে প্রতিটি কেন্দ্রেই বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। কেন্দ্রগুলোর সামনে সক্রিয় রয়েছেন প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা। তবে কোনো কেন্দ্রে অপ্রীতিকর বা সহিংস কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
গোবিন্দপুর মোকলেছ মাতব্বর রোডের মিশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, দু’একজন করে ভোটার প্রবেশ করছেন আবার ভোট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এখানকার এডু-এইড স্কুল কেন্দ্রেও একই অবস্থা। দু’টি কেন্দ্রের সামনেই বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দুটি কেন্দ্রই ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন।
এডু-এইড স্কুল থেকে ভোট দিয়ে বের হন স্থানীয় একটি মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক সুজিত দত্ত। তিনি বলেন, ‘ভোট কেন্দ্র প্রায় ফাঁকা। ভোট কেন্দ্রের সবাই প্রায় বসে আছেন। গিয়ে দু’তিন মিনিটের মধ্যে ভোট দিয়ে চলে এসেছি।’
গোবিন্দপুরের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম ভোট দেয়ার পর বলেন, ‘ভোট নিয়ে এমনিতেই মানুষের আগ্রহ কম, তার ওপর বৃষ্টি হওয়ায় মানুষ আর ভোট দিতে আগ্রহ পাচ্ছে না। সকালে বৃষ্টির পর আমি ভোট দিয়ে এসেছি। খুব কাছের একজন ভোটে দাঁড়িয়েছেন। ভোট কেন্দ্রে তাই না গেলেই নয়।’
আট হাজার ভোটার নিয়ে গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। এ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখানে ভোটগ্রহণের জন্য ছয়টি বুথ রয়েছে। দুপুর পর্যন্ত একটি কেন্দ্রে ১২০টি ভোট পড়েছে।
গোবিন্দপুরের ফ্রেন্ডস স্কলাসটিক ইনস্টিটিউটেও ভোটারদের ভিড় দেখা যায়নি। এ কেন্দ্রগুলোর সামনে ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের ট্রাক্টর প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাক আহমেদ ও টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুর রহমান রতনের বিপুল সংখ্যক কর্মী ও সমর্থকদের দেখা গেছে।
৬০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘুড়ি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মাহমুদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই সকাল থেকে ভোটগ্রহণ চলছে। তবে ভোটার উপস্থিতি একটু কম। আশা করি আমি জয়ী হব।’
সকাল ৮টায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সম্প্রসারিত অংশের ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনসহ কয়েকটি পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন/উপনির্বাচনের ভোট শুরু হয়। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোর থেকেই বৃষ্টি ছিল। ৯টার পর বৃষ্টি থেমে যায়। সূর্যেরও দেখা মেলে। কিন্তু দুপুর ২টা থেকে আবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মাণ্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ ইউনিয়নকে ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়েছে। এসব ওয়ার্ডে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট হচ্ছে।
নতুন এ ১৮টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২৫ জন প্রার্থী। তাদের ৯৯ জনই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে দল থেকে তাদের কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।
এ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে দলটির তৃণমূলের ৭-৮ জন নেতাকর্মী এ নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন, এমন প্রার্থী (স্বতন্ত্র) আছেন ১৫ জন। সংরক্ষিত ছয়টি ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ২৪ জন। এ ১৮ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩৫ জন।
আরএমএম/এনডিএস/এমকেএইচ