জনবসতিতে অধিগ্রহণ নয়, রাস্তার ক্ষেত্রে জলাধার রক্ষার নির্দেশ
রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) বা এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় জনবসতিপূর্ণ এলাকায় জমি অধিগ্রহণ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে রাস্তা তৈরির সময় জলাধার নষ্ট না করারও নির্দেশ দেন তিনি।
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য জানান।
এ সময় মংলা বন্দরকে সার্বক্ষণিক ড্রেজিংয়ের আওতায় রাখা, সুন্দরবনের জলাশয়সহ পরিবেশ রক্ষা, দেশের সব সড়কের বিষয়ে পরিকল্পনাসহ বেশকিছু প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরেন তিনি।
জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ইপিজেড বা এ ধরনের নতুন নুতন আইডিয়া যেগুলো আছে, এসব ক্ষেত্রে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় জমি অধিগ্রহণ নিরুৎসাহিত করতে হবে। মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে আমরা এগুলো করতে চাই না।’
সড়কের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘চার লেন সড়ক করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর একটা নির্দেশ আছে। দেশে যত সড়ক আছে, কতটি সড়ক করবেন, পুরো একটা ম্যাপ করে, ড্রয়িং করে একনেকে জানাবেন। এ নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন সড়ক ও জনপথকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রাস্তার পাশে যখন কাজ করবেন তখন ড্রেন ও জলাধার যেন থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খাল ধ্বংস করবেন না, খাল যেন থাকে।’
সড়কের একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে জায়গা রাখতে হবে, যেখানে টয়লেট, প্রসাধন, চা খাওয়া, বিশ্রাম নেয়া- এগুলো করা যায়। এ বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
মংলা সমুদ্র বন্দর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘মংলা বন্দরকে সার্বক্ষণিক ড্রেজিংয়ের আওতায় রাখতে হবে। যেসব নদীতে প্রাণীরা যাতে নিরাপদে থাকতে পারে, নিরাপদে খেতে পারে, বাঘ থাকতে পারে, প্রজনন করতে পারে– সেই পরিবেশটা সুরক্ষা করতে হবে। যারা আমাদের সংশ্লিষ্ট, তারা এটা প্রতিপালন করবেন।’
তিনি বলেন, ‘হালদায় মাছের পোনা যেখানে ছাড়ে, সুন্দরবনের কিছু খাল আছে যেখানে বাঘ পানি খায়, তারা যেন নিরাপদে পানি খেতে পারে, এসব খাল-নদীতে হাত দেয়া যাবে না।’
বিদ্যুতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, ‘যে এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তারা যেন একটু অগ্রাধিকার পায়। যে এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করলাম, তার আশপাশ অন্ধকার থাকবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
‘ভয়ঙ্কর খিটখিটে একটা ব্যাপার আছে প্রশাসনে। পদ বিন্যাস, পদ সৃষ্টি, নিয়োগ বিধি ইত্যাদি খিটখিটে অনেক বিষয় আছে। এসব বিষয়ে তিনি চান সুসংহত করা হোক। একেবারে শেষ করতে না পারি, কিন্তু এটাকে কমিয়ে আনা। এটা নিয়ে কাজ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী’- যোগ করেন এম এ মান্নান।
একনেকে নতুন ১০টি ও সংশোধিত ৩টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ ১৩ প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ৪৫৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি (জিওবি) ৯ হাজার ৪৮১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ১৫৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ দুই হাজার ৮২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
পিডি/এএইচ/এমএস