অস্ত্র নিয়ে কীভাবে বিমানে উঠল ‘জিম্মিকারী’ যাত্রী?
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুবাইগামী বিজি ১৪৭ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে উড়োজাহাজের ভেতর ‘জিম্মিকারী’ ব্যক্তি পিস্তল বের করে দুই রাইন্ড গুলি ছুড়ে। এ সময় যাত্রীরা ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন।
‘জিম্মিকারী’ ব্যক্তিটি চিৎকার করে এ সময় বলতে থাকেন, আমার ডিমান্ড ফুলফিল না করে বিমান অবতরণের চেষ্টা করলে বিপদ আছে। সবাইকে নিয়ে মরবেন বলেও তিনি হুমকি দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী বিমানের একাধিক যাত্রী বিমান থেকে নেমে আসার পর এভাবেই জিম্মিকালীন ঘটনার বর্ণনা দেন। তারা বিমানের পাইলট ও ক্রুদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তাদের প্রশ্ন, সাধারণত বিমানবন্দরে প্রবেশের পর থেকে বিমানে আরোহণের আগে একাধিক স্ক্যান মেশিনে নিরাপত্তা তল্লাশির পর বিমানযাত্রীদের বোর্ডিং পাস দেয়া হয়। এমন কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কীভাবে একজন যাত্রী বিমানে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করল?
বিকেল পৌনে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিমান ছিনতাইয়ের ওই ঘটনায় শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে কাটায় গোটা দেশবাসী। এরই মধ্যে রাত ৭টা ১৭ মিনিটে অপারেশনে নামে কমান্ডো বাহিনী। ৭টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ওই অভিযানে নিহত হন উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী।
পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় কমান্ডো অপারেশন পরিচালিত হয়। অভিযানে সবাইকে নিরাপদ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানের সবাই সুস্থ আছেন। যাত্রী ও ক্রুদের কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হননি। তবে কথিত বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ‘আক্রমণাত্মক’ হওয়ায় তিনি নিহত হন।
ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী অস্ত্র নিয়ে কীভাবে উড়োজাহাজে উঠল- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করেছেন কি-না, প্রবেশ করলে কীভাবে করেছেন এবং কী উদ্দেশ্যে করেছেন- তা জানাসহ সার্বিক বিষয়াদি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠিত হবে। তদন্ত কমিটির সদস্য সংখ্যা তিন থেকে চারজন হতে পারে।
উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীর নাম মাহাদি বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজটি বোয়িং-৭৩৭ মডেলের। ১৪২ জন যাত্রী ও সাতজন ক্রু নিয়ে বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল।
এমইউ/এমএআর/পিআর