বৃদ্ধার আর্তি : ভিক্ষা চাই না ফুলের তোড়াটা কিনেন
দুপুর ১টা, রাজধানীর পান্থপথে বসুন্ধরা সিটি মলের সামনে ট্রাফিক সিগন্যালে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ অসংখ্য যানবাহন দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে। কোনো ভিআইপি যাবেন বলে সার্ক ফোয়ারা মোড়ের সবগুলো পথই বন্ধ। সূর্যের প্রখর তাপে অনেকক্ষণ আটকে থাকা এক মোটরসাইকেল আরোহী উসখুস করে বলেন, ‘এইরে সেরেছে, দুপুর ১টায় পল্টন মোড়ে থাকার কথা, এখনও বসুন্ধরার মোড়েই আটকে আছি।’
এ সময় এক বৃদ্ধাকে দুটো গোলাপ ফুলের তোড়া হাতে সবগুলো যানবাহনের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। তার বয়স ৬০/৬৫ বছরের বেশি বৈ কম হবে না। বয়সের ভারে মুখের চামড়ায় ভাঁজ পড়েছে। রোদের তাপ থেকে রক্ষা পেতে ঘোমটা টেনেছেন মাথায়।
প্রথম দর্শনে মনে হবে বৃদ্ধা নিজের বা আপন কারও জন্য গোলাপ ফুলের তোড়া দুটো কিনে বাসায় ফিরছেন। একটু ভালো করে তাকালে দেখা যায় তিনি ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে থাকা বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের কাছে গোলাপ ফুলের তোড়া কেনার জন্য অনুরোধ করছেন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই তাকে ফিরিয়ে দিচ্ছিল।
তখন বৃদ্ধা আকুতি জানিয়ে বলতে থাকেন ‘আপনাদের কাছে ভিক্ষা বা সাহায্য চাই না, দয়া করে ফুলের তোড়াটা কেনেন।’
এরই মাঝে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশার ভেতর থেকে কেউ একজন কটু কথা বলায় বৃদ্ধা রাগে বলতে থাকেন, ‘নদী ভাঙনে জমি জমা সব হারাইছি। আমরা তো সরকাররে ভোট দিছি। আমাগোতো একটু গতি হইলো না।’ এ কথা বলে ওই স্থান ত্যাগ করেন তিনি।
এ সময় তার মতো একজন বৃদ্ধাকে এভাবে রাস্তায় ফুল বিক্রি করতে দেখে অনেককেই আফসোস করতে দেখা যায়।
এমইউ/এমএমজেড/পিআর