পোস্টারে পোস্টারে সয়লাব পাড়া-মহল্লা
রিকশায় পোস্টার লাগিয়ে চলছে মাইকিং। পরিচিত গানের সুরে চাওয়া হচ্ছে ভোট। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচনে নব গঠিত ওয়ার্ড কাউন্সিলের নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। পুরো এলাকার পাড়া-মহল্লা নির্বাচনী পোস্টারে পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেছে।
ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা তেমন চোখে না পড়লেও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখর পুরো এলাকা। নিজের পক্ষে ভোট চাইতে ভোটারদারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা। নিজের পরিচিতি ও নানা প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে ভোটারদের কাছে বিতরণ করছেন লিফলেট।
২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের পাশাপাশি নতুন ১৮ ওয়ার্ডসহ ১৯ ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজধানীর বাড্ডা, মেরুল, বেরাইদ, সাতারকুল এলাকায় বইছে উৎসবের আমেজ। এসব এলাকার প্রতিটি অলিগলি প্রার্থীদের পোস্টার ছেয়ে গেছে।
২০১৬ সালের ৯ মে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে (নিকার) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আটটি করে ইউনিয়ন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ডকে দশটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মান্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ ইউনিয়নকে ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়।
অপরদিকে উত্তর সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, বেরাইদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও হরিরামপুর ইউনিয়নকে ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এসব ওয়ার্ডে প্রথমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে কাউন্সিলর প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের কাছে। ভোট চাওয়ার পাশাপাশি দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা।
এদিকে ডিএনসিসির উপ-নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের তেমন প্রচারণা নেই বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। কাউন্সিলর কে হবেন, কেমন কাজ করবেন, কাকে ভোট দেবে জনগণ এসব নিয়েই এলাকাবাসীর আগ্রহ বেশি।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আনিসুল হকের মৃত্যুতে ডিএনসিসির মেয়র পদ শূন্য হয়। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুসারে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসির মেয়র পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে একই বছরের ১৪ জানুয়ারি নির্বাচন স্থগিতাদেশের ব্যাপারে দুটি আলাদা পিটিশনের প্রেক্ষিতে বিচারপতির দ্বৈত বেঞ্চ ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন।
রাজধানীর বাড্ডায় ২১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওসমান গণির মৃত্যুতে এই ওয়ার্ডেও ২৮ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপ-নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এ ওয়ার্ডে মোট সাতজন কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ওয়ার্ডের প্রতিটি অলিগলি নির্বাচনী পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেছে। দিনভর চলছে মাইকিং, ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা।
এ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হায়দার হোসেন বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে তত প্রচারণা বাড়ছে। সারাদিন শুধু মাইক বাজে। প্রার্থীরা এসে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আমারা সাধারণ ভোটাররা শুধু তাদের কথা শুনে যাচ্ছি। তবে আমাদের কাছে যাকে যোগ্য মনে হবে, যিনি এলাকার জন্য কাজ করবেন তাকেই ভোট দেবো।
এ ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর গণসংযোগের দায়িত্বে থাকা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ওয়ার্ডে মোট সাতজন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাই প্রতিযোগিতাও হবে কঠিন। নিজেদের প্রার্থীদের পক্ষে আমরা এলাকাবাসীর কাছে ভোট চাচ্ছি, প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন গুণবাচক দিক তুলে ধরছি। বাকিটা ভোটারদের সিদ্ধান্ত। আশা করছি ২৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এলাকাবাসী যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নিবেন।
এএস/এএইচ/জেআইএম