ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

মৃতদেহ হস্তান্তরই এখন বড় চ্যালেঞ্জ : আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:১৯ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পুরান ঢাকার চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে অগ্নিদগ্ধদের দেখতে এসে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘পুরান ঢাকার চকবাজারে গতকাল রাতের অগ্নিকাণ্ডে যারা আহত হয়ে এখানে এসেছেন তাদেরকে দেখতে আমরা এসেছিলাম। আমরা দেখলাম ৯ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এর মধ্যে তিনজন আইসিইউতে এবং ছয়জন বেডে আছেন।’

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক, যেটি কারোরই কাম্য হতে পারে না। সারারাত ধরে ফায়ার ব্রিগেড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করেছে। স্থানীয় জনগণ সারারাত ধরে কাজ করেছেন। সবাই চেষ্টা করেছেন দ্রুত আগুন নেভানোর। যারা আহত তাদের হাসপাতালে হস্তান্তর করার জন্য।’

আইজিপি বলেন, ‘আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ যে কয়টি মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হবে বা হয়েছে, সে কয়টিকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা। বিশেষ করে অগ্নিকাণ্ডে অগ্নিদগ্ধ মরদেহ শনাক্তকরণে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। কারণ এ সময় মুখের বা দেহের আকৃতি চেনা যায় না। পরিধেয় কোনো কিছু চেনা যায় না।’

মৃতদেহ ডিএনএ টেস্ট প্রসঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, ‘যেটুকু শুনেছি যারা মারা গেছেন তারা অত্যন্ত ভয়ঙ্করভাবে পুড়ে গেছেন। তাদের এখন ডিএনএ টেস্ট করতে হবে। ডিএনএ টেস্ট করে নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে ডিএনএ ম্যাচিং করতে হবে। যদি তাদের নিকটাত্মীয়দের শনাক্ত করা যায়, সেক্ষেত্রে নিখোঁজ মরদেহগুলো আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অফিসারদের কাছ থেকে যেটুকু পেয়েছি তার সংখ্যা কমবেশি হতে পারে, এখনো পর্যন্ত ৩৭ জনকে চিহ্নিত করা গেছে বলে আমি জানতে পেরেছি। এর মধ্যে ১২ জনকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এটুকু তথ্য আমি এখানে এসে জানতে পেরেছি।’

অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বিষয়ে মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আপডেট করছিলাম। আমি যেটুকু শুনেছি ঢাকা মেডিকেলের মর্গে ৬৭ মৃতদেহ আছে। ওখানে ধ্বংসাবশেষের নিচে যদি আর কোনো মৃতদেহ না থেকে থাকে তাহলে আমরা বলতে পারি মৃতের সংখ্যা ৬৭ জন। তবে আমি এটা নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।’

নিখোঁজদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘৬৭ জনের মধ্যে ৩৭ জন শনাক্ত হয়েছে। সুতরাং বাকিরা নিখোঁজ। শনাক্ত হওয়ার পরেই আপনি বলতে পারবেন আমি আমার আত্মীয়কে পেলাম। যতক্ষণ পর্যন্ত শনাক্ত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি নিখোঁজ।’

পুরান ঢাকার অলিগলিতে অবৈধ গোডাউনগুলো স্থানান্তর করতে সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়েছিল জানিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘নিমতলার ঘটনার পরে সবাই মিলে আমরা চেষ্টা করেছিলাম পুরান ঢাকার অলিগলিতে অবৈধ যেসব গোডাউন আছে সেগুলো স্থানান্তর করার। সরকারের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল এবং আমার জানামতে কেরানীগঞ্জের ওইদিকে জমি নির্দিষ্ট করে দিয়ে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।’

‘বিষয়টি যেহেতু একটি সংস্থা দেখে না...অনেকগুলো সংস্থা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। এখানে সিটি কর্পোরেশন আছে, যারা ব্যবসা করার লাইসেন্স দেয় তাদের বিষয় আছে। বিস্ফোরক অধিদফতেরর বিষয় আছে। পরিবেশ অধিদফতরের বিষয় আছে। পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের বিষয় আছে। এখানে অনেকেই সম্পৃক্ত রয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পুরান ঢাকার এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া উচিত’, বলেন জাবেদ পাটোয়ারী।

তিনি বলেন, ‘আমি যে টুকু শুনতে পেরেছি খুব শিগগিরই এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে কর্মপন্থা ঠিক করা হবে...যারা এখানে রয়ে গেছেন তাদেরকে অন্য কোথাও কিভাবে সরিয়ে নেয়া হবে সে বিষয়ে।’

প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টি সারাক্ষণ খোঁজখবর রাখছেন জানিয়ে জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে (প্রধানমন্ত্রী) কয়েকবার কথা বলেছেন। এখানে রোগীরা কেমন আছেন সে বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ করার জন্য উনি আমাদের সকলকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।’

এমএএস/এসআর/পিআর

আরও পড়ুন