রিজার্ভ চুরির প্রতিবেদন প্রকাশ না করার কারণ জানালেন অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্ত যাতে প্রভাবিত না হয় সেজন্য ড. ফরাসউদ্দিন আহমেদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
চুরি যাওয়া রিজার্ভ উদ্ধারের কাজ চলমান রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ভবিষ্যতে যখনই কোনও অগ্রগতি হবে তা সংসদকে অবহিত করা হবে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে রিজার্ভ চুরির ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়ার কারণসহ ঘটনার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে অর্থমন্ত্রীকে সংসদে ৩০০ বিধিতে বক্তব্য দেয়ার দাবি করেছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ড. ফরাসউদ্দিনের (বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর) পাশাপাশি পুলিশের তদন্ত বিভাগকে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। সিআইডির তদন্ত কার্যক্রম এখনও চলমান আছে। যে কারণে ফৌজদারি তদন্ত কার্যক্রমে যাতে কোনও প্রভাব না ফেলে সেজন্য ড. ফরাসউদ্দিনের রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ চুরির বিষয়টি একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ। এর সঙ্গে অনেক দেশ জড়িত আছে। এই বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই ও ফিলিপাইন সরকার তদন্তে নামে। এর ধারাবাহিকতায় শ্রীলঙ্কা থেকে ২০ মিলিয়ন ও ফিলিপাইন থেকে ১৪ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন ডলার ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ৬৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার উদ্ধারে কার্যক্রম চলছে। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আমরা মামলা করেছি।’
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণও পেয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।
রিজার্ভ চুরির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার করে আন্তর্জাতিক হ্যাকারদের মাধ্যমে আমাদের রিজার্ভের একটি অংশ শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনে পাচার করা হয়। তারা ৯৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচারের চেষ্টা চালায়। এর মধ্যে পাঁচটি ফলস (নকল) পেমেন্ট ইন্সট্রাক্টরের মাধ্যমে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ট্রান্সফার সম্পন্ন হওয়ার পর নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বাকিগুলো বন্ধ করে দেয়। রিজার্ভ চুরির বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে সরকার চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধার, চুরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিতকরণ এবং ভবিষ্যৎ চুরি রোধে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। তিনি দ্রুততার সঙ্গে সরকারকে রিপোর্টও দেন।
এইচএস/জেডএ/এমএস