নদী বাঁচাতে বছরজুড়ে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানোর দাবি
নদী বাঁচাতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম বছরজুড়ে চলমান রাখার দাবির পাশাপাশি দখলকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সোমবার বাংলাদেশ অনলাইন এক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ) আয়োজিত ‘নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদের বর্তমান-ভবিষ্যৎ' শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।
আলোচনা সভায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শুধু আজ নয়, অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন নদী দখলমুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে নদী দখলের ব্যাপারে একটি মামলার রায় সবসময় প্রচলিত থাকবে। কিন্তু রায়ের যে প্রতিফলন এটা আমরা সব ক্ষেত্রে দেখছি না। অনেকে নদী কিংবা খালের মালিকানা দাবি করে। তাই সুনির্দিষ্ট করে নদী ও খাল চিহ্নিত করতে হবে। নদীর কোনো ব্যক্তি মালিকানা নেই। আমি মনে করি একটি মন্ত্রণালয় হওয়া উচিত শুধু নদী-খাল বাঁচানোর জন্য। এ নদী বাঁচানোর দায়িত্ব কার? দায়িত্ব এড়িয়ে দোষ চাপায় অন্য মন্ত্রণালয়ের ঘাড়ে। এজন্য একটি আলাদা মন্ত্রণালয় করা দরকার। নদী-খাল দখলের মতো ঘৃণ্য কাজ যাতে কেউ না করতে পারে, সেজন্য কঠোর হাতে দমনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘নদী দখলের কারণে আমরা নৌপথের সাশ্রয়ী ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। দখলদার যারা এ সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, তাদের কারণে নৌপথ ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এক সময় ৩৮ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল, এখন সেটা ১২ হাজার কিলোমিটারে এসে ঠেকেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নৌপথ উদ্ধারে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। সাধারণ মানুষকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে যাতায়াত ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখছি। কিন্তু আমাদের নৌপথ যেভাবে দখল হয়ে যাচ্ছিল, নদীর পাড় যেভাবে দখল হয়ে যাচ্ছিল বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা একটি আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।’
অন্য বক্তারা বলেন, বুড়িগঙ্গার পাড়ে উচ্ছেদ অভিযানে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানকে বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে আমরা আবার শঙ্কিত হচ্ছি। যেসব জায়গা উদ্ধার হয়েছে সেসব জায়গায় ফুলের বাগান এবং সাধারণ মানুষের জন্য হাঁটার জায়গা করে সংরক্ষণের আহ্বান জানান তারা।
বোয়াফের সভাপতি কবির চৌধুরী তন্ময়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছির উদ্দিন আহমেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম এমপি, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের নির্বাহী সভাপতি অশোক বড়ুয়া, ভ্যাটেরান হকি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ প্রমুখ।
এএস/এনডিএস/এমএস