রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার আশ্বাস মোদির
মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে ঢাকাকে সহযোগিতা করবে দিল্লি। আর বাংলাদেশের এ সংকটে ভারত সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এমন প্রতিশ্রুতির কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার পঞ্চম জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে বর্তমানে দিল্লি অবস্থান করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বৈঠক শেষে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকা ফিরে আসবেন।
এ সফরে তিনি উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জেসিসি বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই সফরে দু’দেশের মধ্যে দুর্নীতির তদন্ত, টেলিভিশন সম্প্রচার ও ওষুধ স্থাপনাসহ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ভারতের মানবিক সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারতের সহযোগিতার অনুরোধ করেন। এ সময় রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে সবসময় থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন মোদি। সেইসঙ্গে দ্রুত প্রত্যাবাসনের ভারতের সহযোগিতার নিশ্চয়তাও দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন মেয়াদে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে ভারতের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিগত কয়েক বছর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার ড. মোমেনকে অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রথম বিদেশ সফরের জন্য ভারতকে বেছে নেয়ার প্রশংসা করেন তিনি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সামপ্রতিক অগ্রগতির বিষয় অবহিত করেন। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারত যেভাবে দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি ইস্যুগুলো বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে, তা সর্বসাধারণে প্রশংসিত হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের অংশিদারিত্ব আরও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে ভারতের প্রতিশ্রুতির কথা আবারও ব্যক্ত করেন তিনি। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ককে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের মধ্যে মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মনমোহন সিংও রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন এবং তিস্তাসহ অনান্য দীর্ঘ অনিষ্পত্তিত ইস্যুর দ্রুত সমাধানের আশা প্রকাশ করেন।
জেপি/বিএ