অক্ষম বন্দীদের মুক্তির বিষয় বিবেচনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
শারীরিকভাবে অক্ষম বয়স্ক বন্দীদের মুক্তি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক শৃঙ্খলা ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
জাহালমের মতো অনেক ঘটনা ঘটে। নিউজও হয়। এভাবে বিনা বিচারে কারাগারে কত মানুষ আছে সেই বিষয়ে তদন্ত করবেন কিনা-জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জেলখানায় কিন্তু একটা সংস্থা আছে, যারা নাকি এ ধরনের কোনো ভিকটিম যদি থাকে তাদের সবসময় আইডেনটিফাই (চিহ্নিত) করার চেষ্টা করে থাকে। সেগুলো অব্যাহত আছে, সেগুলো চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ-ও নির্দেশনা দিয়েছেন যারা নাকি অচল হয়ে গেছে, দীর্ঘদিন জেলখানায় থেকে ফিজিক্যালি (শারীরিকভাবে) অচল হয়ে গেছে, এদের কনসিডার করার জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এদের আইডেনটিফাই করে রিলিজ দেয়া যায় কিনা সেই ব্যবস্থা করার কথা আমাদের বলেছেন।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, ‘কেউ বিনা বিচারে আটকে থাকবে সেটা আমাদের কাম্য নয়। যেই (বিনা বিচারে জাহালমের ৩ বছর কারাবন্দি) ঘটনাটি ঘটল, সেই ঘটনায় কে দায়ী তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিশ্চয়ই এজন্য দায়ী ব্যক্তিকে অনুসন্ধান করে বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গত কয়েকদিনে ৯ জনের মতো মানুষ সীমান্তে নিহত হয়েছেন-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্তে যাতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড না হয় এবং বিএসএফ কেন এ হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে সে বিষয়ে আমাদের বিজিবি আলোচনা করছে। গত কয়েক বছর সীমান্তে ‘জিরো কিলিং’ এর যে বিষয়টি, সেটি বিরাজমান ছিল। কিন্তু নতুন করে কেন এ সমস্যা হচ্ছে সেটি নিয়ে আরও উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হবে। এ কিলিং যাতে আর না হয় সেটি নিয়েই আলোচনা করব।’
নতুন করে রোহিঙ্গা আসার বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বিজিবি জানিয়েছে বর্ডারে সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে। সেখানে আমাদের বিজিবি সতর্ক অবস্থানে আছে। যেভাবে আমরা শুনছি, তেমন আসেনি। যারাই আসুক, তাদের আসা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি।’
একুশে ফেব্রুয়ারির দিন নিরাপত্তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। শহীদ মিনারের দায়িত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে, তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের বাহিনী কাজ করে। এবার বিএনসিসির ৫০০ সদস্য সেখানে থাকবে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ-র্যাব, গোয়েন্দা এবং প্রয়োজনে বিজিবি-আনসার কাজ করবে। কোনো হকার বা অস্থায়ী দোকান বসানো যাবে না। পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেদিন সাদা পোশাকধারী পুলিশও নিয়োজিত থাকবে। দেশি-বিদেশি যারাই আসবে প্রতিবারের মতো এবারও তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কিছু কিছু স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে এবং বইমেলাও চলছে, সব মিলিয়ে একটি ট্রাফিক ব্যবস্থা আমরা করব, সেজন্য রোডম্যাপ তৈরি করব।’
সারা বাংলাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে দিবসটি উদযাপন করতো পারে। সরস্বতী পূজার সময়ও নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এসআর/পিআর