প্লাস্টিকের চাল পাওয়ার খবর ভিত্তিহীন : কৃষিমন্ত্রী
গাইবান্ধায় প্লাস্টিকের চাল পাওয়ার খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, গাইবান্ধায় প্লাস্টিকের চাল বিক্রির অভিযোগে বিভিন্ন চালের দোকানে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় প্লাস্টিকের কৃত্রিম চাল জব্দও করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এটার একদমই ভিত্তি নেই। এ ধরনের নিউজ পেয়ে মিডিয়া খুব তাড়াতাড়ি ইয়ে করে। আমি ডিসির সঙ্গে কথা বলেছি, আমার অ্যাগ্রিকালচারের ডেপুটি ডাইরেক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সেখানে গিয়েছে, সেই চাল এনেছে, রান্না করেছে, মুড়ি বানিয়েছে। সেটা কোনো ক্রমেই প্লাস্টিকের চাল নয়, এটা বাস্তব সম্মত নয়।’
তিনি আরও বলেন, “দেশে চাল এখন সারপ্লাস (উদ্বৃত্ত), চাষীরা বিক্রি করতে পারছে না। আমি আমার রিসিপশনে (সংবর্ধনা) টাঙ্গাইলে গিয়েছি, হাজার হাজার মানুষ টাঙ্গাইল শহরে। এক দাবি- ‘চালের দাম নেই, আমরা কৃষকরা শেষ হয়ে গেলাম। কৃষিমন্ত্রী আমাদের কিছু বলুন।’ আমি যখন বলেছি, মানুষ হাততালিতে ফেটে পড়েছে। কাজেই প্লাস্টিকের চাল, কোথায় থেকে এটা সম্ভব নাকি? কেন খাওয়াবে?”
তাহলে এটা কারা করছে -জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘গাইবান্ধাতে এটা কারা করছে, করে মিডিয়াতে দিয়েছে।’
সেই চালের কিছু নমুনা ঢাকাতেও পাঠানো হয়েছে -এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা সেগুলোও দেখব। ওখানে আমাদের কৃষিবিদরা দেখেছে। প্লাস্টিকের চাল এটা ইম্পসিবল, এটা হতেই পারে না।’
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ দেশে বলে কাছিমের ডিম! আচ্ছা, এটা কি সম্ভব? গত আড়াই বছর ধরে পাঁচ টাকা ৩০ পয়সা একটা ডিমের তৈরি খরচ, সেটি বিক্রি করেছে সাড়ে চার টাকায়। কালকেও আলাপ হলো, একদিনের একটা মুরগির বাচ্চা ন্যূনতম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা খরচ, ১৮ থেকে ১৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পোলট্রি খামারিরা একেবারে শেষ হয়ে গেল। এগুলো আপনারা বলুন। ৮ শতাংশ ইন্টারেস্ট ছিল প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের ফলেও ১২-১৩ শতাংশ করে দিয়েছে। পোলট্রি ফার্ম-ডেইরি ফার্ম কী করে চলবে? তারা মুরগি বিক্রি করতে পারে না। তেলাপিয়া মাছ ৬০-৭০ টাকা ফার্ম গেট প্রাইজ। কাজেই এগুলো অবাস্তব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ দানা জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো কী করে মানুষকে পুষ্টি সম্মত খাওয়াতে পারি এবং কীভাবে নিরাপত্তা বাড়ে। নির্বাচনী ইশতেহারেও এটাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে একটা বড় আধুনিক ল্যাবরেটরি করার ঘোষণা দিয়েছেন জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে খাদ্যে ভেজাল দ্রুত নির্ণয় করা যায়। এছাড়া আট বিভাগে আরও আটটি ল্যাব করা হবে। এসব ল্যাবরেটরিতে যন্ত্র চালানোর জন্য প্রশিক্ষত জনবল দরকার। সে জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের ছেলেরা সবাই স্কুলে যাচ্ছে। তাদের কর্মসংস্থানে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কৃষিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘এই খাতে দক্ষ কারিগর তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেবে।’
আরএমএম/আরএস/আরআইপি