‘বর্ষা সামনে রেখে নদী ভাঙন রোধে গুরুত্ব দিচ্ছি’
বর্ষাকে সামনে রেখে নদী ভাঙন রোধের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
রোববার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান উপমন্ত্রী। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি বর্ষাকে সামনে রেখে ভাঙনের হাত থেকে নদীকে কীভাবে রক্ষা করা যায়। আমরা ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে এরপর ভিজিট করছি। প্রতিমন্ত্রী যাচ্ছেন ও সচিব সাহেব ভিজিট করছেন। জলাবদ্ধতার থেকে রক্ষা করা, হাওর এলাকায় কাজ করা হচ্ছে বর্ষাকে সামনে রেখে।’
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমার দায়িত্ব নেয়ার এক মাসও হয়নি। আমি ছয়টি নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। পরিদর্শন করার পর কাজে গতি কতটা বেড়েছে সেটাও আমি মনিটরিং করছি। এ ফেব্রুয়ারি মাসে হাওর এলাকাসহ আরও কয়েকটি স্থানে পরিদর্শন করব। মানবতার সেবা করা হবে আমাদের মূল কাজ।’
উপমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নোয়াখালীর নদী ভাঙন এলাকায় গিয়ে ৮৮ কোটি টাকার একটা প্রকল্প ছিল সেটা অনুমোদনের ব্যবস্থা করেছি। বর্ষার আগে জিও ব্যাগ ফেলে যাতে রক্ষা করা যায় সেখানে একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ডিএনডি এলাকায় গিয়েছিলাম, আমরা টার্গেট দিয়ে দিয়েছি ১৩টি পাম্প হাউজ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে চালু হবে। অর্থাৎ বর্ষার আগেই। এটা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৫৮৮ কোটি টাকার কাজ চলছে। হাতির ঝিলেন আদলে সেখানে একটা প্রকল্প আমরা দেখে এসেছি। সেনাবাহিনী সেখানে অনেকগুলো খাল উদ্ধার করেছে।’
হাওরে বাঁধ নির্মাণ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির কথা শোনা যায়- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনামুল হক বলেন, ‘আমরা আগে রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করতেছি। অনেক জায়গা থেকেই এ কথা আমার কানে এসেছে। আমরা দেখতেছি কোন কোন জায়গায় কাজের দ্রুততার ক্ষেত্রে অন্তরায়। সেই জায়গাগুলো আমরা কাভার করার চেষ্টা করব। দুর্নীতি বন্ধের ক্ষেত্রে কোন কোন পদক্ষেপগুলো নিলে আমরা একেবারে রুট লেভেল পর্যন্ত যেতে পারি। এগুলো আমরা নির্ণয় করতেছি। আমরা মোটামুটি কতগুলো প্রকল্প স্টাডি করতেছি।’
‘দু্র্নীতি যে পর্যায়ের হোক না কেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে আসে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। কাজের গতি যাতে তড়িৎ হয়, যাতে দুর্নীতি বন্ধ হয় সেটাকে মাথায় রেখে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার আমরা ইনশাআল্লাহ সেই প্ল্যানিংয়ে আছি।’
উপজেলা নির্বাচনে কাদের মনোনয়ন দেয়া হবে- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এ সম্পাদক বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রত্যেকটি উপজেলা তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ ঐক্যমতের ভিত্তিতে একক অথবা অনধিক তিন প্রার্থীর নাম দেবেন। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড সবদিক বিবেচনা করে, ত্যাগ মেধা যোগ্যতা কারণ মনোনয়ন বোর্ড শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, তিনিই আসলে প্রত্যেক উপজেলার ত্যাগী ও মেধাবী সবাইকেই চেনেন।’
‘মনোনয়ন বোর্ড যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই মনোনয়ন দেবেন’ বলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আশা করি সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপি উপজেলা নির্বাচন অংশ গ্রহণ করবে। নির্বাচনে অংশ না নিলে তারা জনগণ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রীর চা চক্রে ঐক্যফন্টের যোগ না দেয়ার বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে উপমন্ত্রী বলেন, ‘অসৌজন্যমূলক আচরণ করা বিএনপির স্বভাব। প্রধানমন্ত্রীর নিমন্ত্রণে যাননি এটা নিঃসন্দেহে অসৌজন্যমূলক।’
ভারত-বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ২০১০ সালের পর আর হয়নি- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি জানলাম, মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকটি কত দ্রুততার সঙ্গে করা যায় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। এটার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা আছে।’
তিস্তা চুক্তির সর্বশেষ অবস্থার বিষয়ে উপমন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তা চুক্তির বিষয়টি শেখ হাসিনা পর্যায়ে রয়েছে...এটাও রাজনৈতিক পর্যায়ে রয়েছে। আমি আশা করি বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ করে এ চুক্তিটি খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে। তবে আমরা মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এটা নিয়ে এখনও বৈঠক করিনি। গঙ্গা ব্যারেজ নিয়েও আমরা কাজ শুরু করিনি। তবে পরবর্তী সময়ে এসব বিষয়ে আপডেট জানাতে পারব।’
আরএমএম/এনডিএস/এমএস