রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্ধারিত সময়েই : ইয়াফেস ওসমান
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন অগ্রগতিতে আমরা কিছুটা এগিয়ে রয়েছি। আমরা চাই, নির্ধারীত সময়েই যেন এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারি। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আশা করি, প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়েই সম্পন্ন করতে পারব।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ফুয়েল তথা ইউরেনিয়াম সরবরাহের জন্য রাশান ফেডারেশনের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে পরামাণু শক্তি কমিশনের সদস্য ইমতিয়াজ কামাল এবং রাশান ফেডারেশনের পক্ষে নিকিতা স্বাক্ষর করেন। এ সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। চুক্তিটি রাশান ফেডারেশনের সঙ্গে হলেও ইউরেনিয়াম সরবরাহ করবে টিভিইএল নামক একটি বহুজাতিক কোম্পানি।
চুক্তির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আমরা রাশান ফেডারেশনের সঙ্গে একটি জেনারেল চুক্তি করেছি। তারপরও এটা একটা বিরাট প্রকল্প, তাই ছোট ছোট অনেক চুক্তিও করতে হয়। এরই অংশ হিসেবেই আজ ফুয়েল তথা ইউরেনিয়াম সরবরাহের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে একটি চুক্তি হলো। ছয়মাস স্টাডির পর চূড়ান্ত চুক্তি হবে।
তিনি বলেন, এটা (রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র) কেবল মাত্র আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এ প্রকল্পের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, নৌপথ মন্ত্রণালয় এমনকি রেলপথ মন্ত্রণালয়ও আছে। অন্যদের কথা আমি বলতে পারব না। তবে আশা করছি, ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট আমরা বুঝে পাব এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয়টা পাব। নিদির্ষ্ট সময়ে মাধ্যেই পাওয়ার প্লান্ট চালু করতে পারব।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, প্রকল্পের কাজ ২৬ থেকে ২৭ শতাংশ হয়েছে। দুর্ঘটনা থেকে নিরাপত্তার জন্য ‘কোরকাচা’ স্থাপন করা হয়েছে। আল্লাহ না করুক পুরো রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বার্ন হয়ে উপরে গ্যাস বের হয়ে গেলেও ‘কোরকাচা’র মাধ্যমে জনগণকে নিরাপত্ত দিতে সক্ষম হব। আশেপাশের জনবসতি বা পরিবেশেরও কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না। এটা বসানোর সময় রাশান ফেডারেশন বলেছে, কোনোকালেই এটা ব্যবহৃত হবে না। তারপরও এ দেশের মানুষের স্বার্থে এটা বাসানো হয়েছে।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যে ব্যয় নির্ধারণ করেছি সেটাই থাকবে। যে ব্যয় ধরা হয়েছে সেটা অন্যন্য দেশের তুলনায় কমই রয়েছে। ফুয়েল নদী পথে আসবে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য রাশিয়া থেকে যেসব কাঁচামাল আনা হচ্ছে সেগুলো ঠিক আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এক্সপার্টরা এগুলো যাচাই-বাছাই করার পরই নিয়ে আনা হয়। তাছাড়া ভারতের জন্য যে প্রতিষ্ঠান যন্ত্রাংশ বানায় একই প্রতিষ্ঠানই আমাদের জন্যও তৈরি করে। সুতরাং মানের দিক দিয়ে খারাপ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুল্লির জন্য কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন প্রথম ইউনিট ২০২২ সালে এবং একই ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালে চালু হবে। সরকার ২০২৩ সালে প্রথম ও ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট বুঝে নেবে।
এমইউএইচ/আরএস/আরআইপি