ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সড়কে সুশাসন প্রতিষ্ঠাই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ‘পরিবহন খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করতে পারায় সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামানো যাচ্ছে না। পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং সড়কে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করাই টানা তৃতীয়বার ক্ষমতা আসা আওয়ামী লীগ সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে (ভিআইপি লাউঞ্জ) শুক্রবার সকাল ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা, দুর্ঘটনার কারণ ও দুর্ঘটনারোধে সুপারিশ তুলে ধরতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন প্রকাশ করে মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ২০১৮ সালে সড়কে ঘটেছে ৫ হাজার ৫১৪টি দুর্ঘটনা। এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ২২১ জন। আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৬৬ জন। আর সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথের মোট দুর্ঘটনার সংখ্যা ৬ হাজার ৪৮টি। এতে নিহত হয়েছেন ৭ হাজার ৭৯৬ জন। আহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ৯৮০ জন।

সংবাদ সম্মেলনে হোসেন জিল্লুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সরকার তাড়াহুড়ো করে সড়ক পরিবহন আইন পাস করলেও তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিচ্ছে না। আবার একই দিনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করে অনেক সমালোচনা ও গণমাধ্যমকর্মীদের বাধার মুখেও সেই আইন কার্যকর করা হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট যে, সরকার ও সরকারের কাঠামো পরিবহন খাত বিভিন্ন দুষ্টু চক্রে বাধা।’

তিনি বলেন, ‘পরিবহন খাতের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার লোকজন, পুলিশ, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে দুর্নীতির দুষ্টু চক্র গড়ে উঠেছে। এ চক্র চায় না পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসুক। এই প্রেক্ষাপটে সড়কে সুশাসন প্রতিষ্ঠা নতুন সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।’

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘উদ্বেগজনক হারে প্রাণহানিতে গত ২৫ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক নিরাপত্তায় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন। এ ছাড়াও নতুন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকারের প্রতিফলনের জন্য আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’

এ সময় বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় এতো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তবুও শৃঙ্খলার কোনো চিত্রই আমরা দেখছি না। জাবির উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আগে একটি কমিটি হয়েছিল। সেই কমিটির সদস্য ছিলেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল, বুয়েট শিক্ষক সামছুল হক ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। সেই কমিটি যে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল তা আজও প্রতিফলিত হয়নি। আমি অনুরোধ করব ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার যেন কার্যকরী উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে সচেতন করতে স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে সড়ক নিরাপত্তা আইন ও সড়ক নিরাপত্তার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হোক।’

বিএফউজের সহ-সভাপতি ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘আজকে যখন এখানে কথা বলতে বসেছি তখন খবর পেয়েছি কুমিল্লায় ইটভাটায় ঘুমন্ত শ্রমিকদের উপর ট্রাক উঠিয়ে ১৩ শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। এটাকে হত্যাই বলতে হবে। আজ রাজপথ রক্তাক্ত। প্রতিদিন রাজপথে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। এসব নিছক দুর্ঘটনা নয়। এর পেছনে রয়েছে এক ধরনের পেশীশক্তি। যাদের কেউ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। অনেকেই বলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে কবে? আমার তো পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, কখনোই সড়কে ফিরবে শৃঙ্খলা।’

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনারোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিলেই শুধু হবে না, সড়কে চাঁদাবাজি-ধান্দাবাজি বন্ধ করতে হবে। নতুন আইন পাস করা হলেও কার্যকর করা হচ্ছে না। তা অতিদ্রুত প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে কার্যকর করতে হবে। যদিও নতুন এ আইনের অনেক অসঙ্গতি সংশোধনযোগ্য।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- সাংবাদিক কুদ্দুস আফ্রাদ, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ, নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ প্রমুখ।

জেইউ/এনডিএস/এমএস

আরও পড়ুন