যাত্রীদের নিরাপত্তায় বিমানে হাতকড়া
ইন-ফ্লাইটে অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সোমবার থেকে হাতকড়া রাখতে শুরু করেছে। গত রোববার বিমান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আজ (সোমবার) তা কার্যকর হলো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার শাকিল মেরাজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনিবার্য হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বিমানে হাতকড়া রাখা হচ্ছে।’
গত ৪ জানুয়ারি লন্ডন থেকে যাত্রীবাহী বিজি-২০২ ফ্লাইটে একজন মদ্যপ যাত্রীকে ঘিরে ঘটা তুলকালাম কাণ্ডের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিমানেন ইন-ফ্লাইটের একটি সূত্রে জানা গেছে, বিমানে ওই যাত্রী উঠেছিলেন লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ডিউটি ফ্রি থেকে কেনা দুই বোতল হুইস্কি নিয়ে। বিমানে চড়েই তিনি সঙ্গে থাকা এক বোতল হুইস্কি একাই পান করেন। এরপর থেকেই মূলত তিনি অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি বেপরোয়া হয়ে কেবিন ক্রু ও যাত্রীদের ওপর চড়াও হন। একজন কেবিন ক্রুর আঙুলে কামড় দিয়ে বসেন মদ্যপ ওই যাত্রী। ফলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও সিলেটে এসে তার বাড়ি যাওয়া হয়নি। আশ্রয় হয়েছে শ্রীঘরে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে আছেন তিনি।
এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুকে রীতিমত ভাইরাল হয় ওই যাত্রীর কাণ্ড। সিলেটে অবতরণের পরপরই তাকে পুলিশে সোপর্দ করে বিমান কর্তৃপক্ষ।
শাকিল মেরাজ আরও বলেন, ওই যাত্রীর আচরণ ছিল একেবার অস্বাভাবিক। নিরাপদ উড্ডয়নের জন্য বড় একটি হুমকি মনে করায় তাকে উড়ন্ত অবস্থায় আটকে রাখা হয়। আকাশে তিনি সহিংস আচরণ করেন। ক্যাপ্টেন আইনানুগ ক্ষমতা অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন।
জড়িত যাত্রীর প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে শাকিল মেরাজ বলেন, ‘কেবিন ইনচার্জের রিপোর্ট বলছে ওই যাত্রী আগে থেকেই প্রচুর পরিমাণ মদ পান করেছিলেন। পরে তল্লাশি করে তার কাছে মদের বোতলও পাওয়া যায়। বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে ও নিরাপত্তার স্বার্থে ওই যাত্রীকে আটকে রাখা হয়। এটি করার বিধান রয়েছে।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে বিমানের এমডি ও সিইও এ এম মোসাদ্দিক আহমেদের মোবাইলে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে জানা যায়, তিনি দাফতরিক কাজে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, বিমানে ২০০৬ সাল থেকে অ্যালকোহল দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিমানে ওঠার আগে যাত্রীরা ডিউটি ফ্রি শপ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ মদ কিনতে পারেন এবং সেগুলো তারা সঙ্গে নিয়েই বিমানে উঠতে পারেন।
আরএম/এনডিএস/এমএস