সেই ফুডকোর্টটি আজও চালু হলো না
লাল ইটের তৈরি অনেকগুলো দোকান, ছোট ছোট ব্রেঞ্চ ও টেবিল। উপরে খোলা আকাশ। বসার টেবিলের পাশেই বাঁশঝাড়, হাসনা হেনা, কাঠ গোলাপসহ নানা ফুলগাছ। এমন এক মনোরম পরিবেশে বসে চা-কফিসহ নানা খাবার খেতে পারবেন নগরবাসীরা। রাজধানীবাসীর এমন সুবিধার কথা মাথায় রেখে বনানীতে গড়ে তোলা হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) একটি ফুডকোর্ট।
কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সংলগ্ন বনানী মাঠের ঠিক বিপরীতে প্রায় এক বিঘা জায়গা নিয়ে নির্মিত ডিএনসিসির এ ফুডকোর্টটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। ২০১৬ সালের শেষ দিকে এর কাজ শুরু হয়। আর ২০১৮ সালের প্রথম দিকেই এটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু ডিএনসিসির এ ফুডকোর্টটি এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি।
কোটি টাকা ব্যয়ের এ ফুডকোর্টটি এখনও কেন চালু হয়নি জানতে চাইলে ফুডকোর্টের প্রকল্প পরিচালক ও ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগ ফুডকোর্টটি নির্মাণ কাজ শেষ করে সম্পত্তি বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে। বর্তমানে এটির দায়িত্বে রয়েছে সম্পত্তি বিভাগ, রাজস্ব বিভাগ এবং স্থানীয় কাউন্সিলর।
ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল মফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। উনি বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।’ পরে মফিজুর রহমানকে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল হামিদ মিয়া বলেন, ফুডকোর্টটি চালু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আশা করা যায়, খুব শিগগিরই এটি চালু হবে। বরাদ্দ বিধি অনুযায়ী ডিএনসিসি নিজেই ফুডকোর্টটি চালাবে নাকি অন্য কাউকে বরাদ্দ দেওয়া হবে সেই বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরও বলেন, বরাদ্দ উপবিধি অনুযায়ী স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা সিদ্ধান্ত দেবেন, এরপরই দ্রুত চালু হবে ফুডকোর্টটি। মূলত ফুডকোর্ট নির্মাণের আগে জায়গাটি দখল হয়ে ছিল। দখলদারিত্ব মুক্ত করার জন্যই ফুডকোর্টটি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করা হয়। এখন আশা করা যায়, খুব শিগগিরই ফুডকোর্টটি চালু হয়ে যাবে।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা শহরে কোথাও বসে আড্ডা দেয়ার মতো জায়গা খুবই কম। তাই খোলা জায়গায় বসে মানুষ চা খাবে, গল্প করবে -এমন চিন্তা থেকে ফুডকোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক এ ফুডকোর্ট করার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী, স্থপতি কাসেফ চৌধুরীর নকশায় ও তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণ করা হয়।
ফুডকোর্টটি নির্মাণ করেছে এস এম কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দৃষ্টিনন্দন এ ফুডকোর্টটি ভোজনরসিকদের আকৃষ্ট করবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
এএস/আরএস/এমএস