শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফের যাত্রা শুরু
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের রেকর্ড গড়ার পর চমক লাগানো মন্ত্রিসভার সব সদস্য শপথ নিলেন। এই মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া রয়েছেন মন্ত্রী ২৪ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৯ জন ও উপমন্ত্রী ৩ জন।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টা দিকে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের আলাদা আলাদাভাবে শপথবাক্য পাঠ করান। তার আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। শপথ অনুষ্ঠান শেষে তারা শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা শপথ নিলেন চতুর্থবারের মতো। এর মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠিত হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে।
শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শফিউল আলম। শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিচারপতিরা, শিক্ষক, কূটনীতিকরাসহ এক হাজারের মতো অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের তালিকা প্রকাশ করেন। এই তালিকা অনুযায়ী আজ বিকেলে প্রত্যেক মন্ত্রীর বাড়িতে পরিবহন পুল থেকে গাড়ি যায়। ওই গাড়িতে চড়ে মন্ত্রীরা বঙ্গভবনে যান শপথ নিতে।
নতুন মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছে রেখেছেন।
মন্ত্রী হিসেবে যারা শপথ নিলেন যারা
আ ক ম মোজাম্মেল হক (মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী), ওবায়দুল কাদের (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী), ড. আবদুর রাজ্জাক (কৃষিমন্ত্রী), আসাদুজ্জামান খান কামাল (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), ড. হাছান মাহমুদ (তথ্যমন্ত্রী), আনিসুল হক (আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী), আ হ ম মুস্তফা কামাল (অর্থমন্ত্রী), তাজুল ইসলাম (এলজিআরডি), ডা. দীপু মনি (শিক্ষামন্ত্রী), ড. আবদুল মোমেন (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আবদুল মান্নান (পরিকল্পনামন্ত্রী), নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন (শিল্পমন্ত্রী), গোলাম দস্তগীর গাজী (বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী), জাহেদ মালেক স্বপন (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী), সাধনচন্দ্র মজুমদার (খাদ্যমন্ত্রী), টিপু মুনশি (বাণিজ্যমন্ত্রী), নুরুজ্জামান আহমেদ (সমাজকল্যাণমন্ত্রী), শ ম রেজাউল করিম (গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী), শাহাব উদ্দিন (পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী), বীর বাহাদুর উশৈ সিং (পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী), সাইফুজ্জামান চৌধুরী (ভূমিমন্ত্রী), নুরুল ইসলাম সুজন (রেলপথমন্ত্রী), স্থপতি ইয়াফেস ওসমান (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী), মোস্তাফা জব্বার (ডাক ও টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী)।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যারা শপথ নিলেন
কামাল আহমেদ মজুমদার (শিল্প মন্ত্রণালয়), ইমরান আহমদ (প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়), জাহিদ আহসান রাসেল (যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়), নসরুল হামিদ (বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়), আশরাফ আলী খান খসরু (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়), বেগম মন্নুজান সুফিয়ান (শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়), জাকির হোসেন (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়), শাহরিয়ার আলম (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়), জুনায়েদ আহমেদ পলক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ), ফরহাদ হোসেন (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়), স্বপন ভট্টাচার্য (এলজিআরডি), জাহিদ ফারুক (পানিসম্পদ), মুরাদ হাসান (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়), শরিফ আহমেদ (সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়), কে এম খালিদ (সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়), ডা. এনামুর রহমান (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়), মাহবুব আলী (বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়), শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়)।
উপমন্ত্রী হিসেবে যারা শপথ নিলেন
বেগম হাবিবুন নাহার (পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়), এনামুল হক শামীম (পানিসম্পদ), মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (শিক্ষা মন্ত্রণালয়)।
আজকের শপথ অনুষ্ঠানের জন্য রোববার দুপুরেই ফোন পেয়ে যান মন্ত্রীরা। গণভবন থেকে বেলা দেড়টার দিকে তালিকা নিয়ে সচিবালয়ে ফেরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
উল্লেখ্য, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তারা পায় ২৮৮ আসন। অন্যদিকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের জোট ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি আসন। তবে এ সাতজনের কেউ এখনও শপথ নেননি।
এফএইচএস/এনএফ/জেএইচ/আরআইপি/ এসজি